আওয়ামী লীগের জোটে দলের সংখ্যা ১০০’রও বেশি

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জোট গড়তে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিসহ নবগঠিত বিরোধী জোটগুলোকে টেক্কা দিতে এই জোটে দলের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে ১০০ ছাড়াতে চলেছে।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জোট গড়তে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিসহ নবগঠিত বিরোধী জোটগুলোকে টেক্কা দিতে এই জোটে দলের সংখ্যা ১০০ ছাড়াতে চলেছে।

তবে এক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঘটনাটি হলো বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও ক্ষমতাসীন দলের জোটে যোগ দিতে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা বিশ্বে সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এই ঘটনা এর আগে কখনই ঘটেনি।

তফসিল ঘোষণার আগে পর্যন্ত ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ইউনাইটেড ন্যাশনাল এলায়েন্স (ইউএনএ) ও সাবেক বিএনপি নেতা নাজমুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ন্যাশনাল এলায়েন্স (বিএনএ) ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর ১০৪টি দলের নেতৃত্বে চলে আসছে আওয়ামী লীগ।

৫৮টি দল নিয়ে গত ২০১৭ সালের মে মাসে গঠিত হয় ইউএনএ। আর বিএনএ জোটে রয়েছে আরও ৩১টি দল। এর সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স (আইডিএ) ক্ষমতাসীন দলের জোটে যুক্ত হলে এই সংখ্যা আরেক ধাপ বেড়ে যাবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গত বছর চারটি দল মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। বর্তমানে এই জোটে দলের সংখ্যা ৮। আর চলতি বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে সমমনা ১৮টি ধর্মভিত্তিক দল নিয়ে গঠিত হয় আইডিএ। ইসলামি ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মিছবাউর রহমান চৌধুরী এই জোটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এই দুই জোট যুক্ত হলে আওয়ামী লীগের জোটে দলের সংখ্যা হয় ১২৯টি যা গত তিন দশকের মধ্যে রেকর্ড। তবে এসব দলের বেশিরভাগই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত নয়। অর্থাৎ দলগুলো নির্বাচনে আলাদাভাবে প্রার্থী দিতে পারবে না। এই দলের নেতারা স্বতন্ত্রভাবে বা নিবন্ধিত অন্য দলের মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হতে পারবেন। ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ছয় ডজন দল নিয়ে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসম আব্দুর রব। ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে থাকা প্রধান দলগুলো। জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেই নির্বাচনে আব্দুর রবের জোট ১৯টি আসন পেয়েছিল।

আর এবার ক্ষমতাসীন জোটের বিপরীতে রয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট, বিএনপিসহ ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য ও আসম আব্দুর রবের জেএসডি। এর বাইরে নির্বাচনে রয়েছে ১৪ দলীয় জোটের বাইরে থাকা বামপন্থীদের বাম গণতান্ত্রিক জোট।

‘নজিরবিহীন ঘটনা’

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের মধ্যে জোট হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা হলেও প্রধান বিরোধী দল ও ক্ষমতাসীনদের জোটবদ্ধ হওয়ার ঘটনা আগে ঘটেনি।

সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ নিজাম আহমেদ সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার জানামতে সংসদীয় গণতন্ত্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সারা বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা আর নেই।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের এই অধ্যাপকের মন্তব্য, ‘মনে হচ্ছে অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago