রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু আগামীকাল?

বান্দরবানের ঘুন্ধুম এলাকায় বাংলাদেশের স্থাপন করা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কেন্দ্র। ছবিটি গত সোমবার তোলা। ছবি: স্টার

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। আগামীকাল (১৫ নভেম্বর) থেকে নিজেদের জন্মভিটায় ফিরতে শুরু করবে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গারা। প্রথম ধাপে ২ হাজার ২শ’ ৬০ জনকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার।

এ উপলক্ষে টেকনাফের কেরানতলীর নাফ নদীর তীরে এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী স্থান ঘুনধুমে দুইটি প্রত্যাবাসন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের জন্য ৩৩টি করে আধপাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন কমিশনার আবুল কালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমারের চিহ্নিত করা ৪৮৫টি পরিবারের ২ হাজার ২শ’ ৬০ জন রোহিঙ্গাকে প্রাথমিকভাবে এই দুটি কেন্দ্রে রাখা হবে।’

এর আগে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়ে প্রথম পর্যায়ে ৫ হাজার শরণার্থীকে নিজেদের নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে মিয়ানমার। যাদের অর্ধেককে আগামীকাল ফিরিয়ে নেবে তারা।

গতকাল পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। কী ঘটতে চলেছে, চলুন তা দেখি। এই ব্যাপারে উভয় দেশই নিয়মানুসারে অগ্রসর হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে আসা অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে যাবে কিনা এবং নিজ দেশে তাদের প্রত্যাবাসন কতটুকু সম্মানজনক হবে, সে ব্যাপারে এখনও উদ্বেগ রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।

এদিকে, জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এক নথিতে উল্লেখ করেছে, মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে রাখা হলে তাদের আর মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে না।

ওই গোপনীয় নথি বিশ্লেষণ করে গতকাল রয়টার্স আরও জানিয়েছে, শরণার্থীদের যেন দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখা না হয়, এমন ভাবনা থেকেই এই পরিকল্পনা করেছে ইউএনএইচসিআর।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য অস্থায়ীভাবে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ভয়, দেশহারা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণেই এসব কেন্দ্র চিরস্থায়ী হয়ে যেতে পারে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেছেন, রাখাইনে এখনও রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। এখনও তাদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মিয়ানমার সরকার। সেখানে তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। 

এরমধ্যে, মিয়ানমারের ভেরিফায়েড তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গাদের কয়েকজন ভয়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে থেকে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়ার কথাও জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।

Comments

The Daily Star  | English

No Iranian missiles hit US base in Qatar, US official tells Reuters

Iran vowed to defend itself a day after the US dropped bombs onto the mountain above Iran's Fordow nuclear site

1d ago