মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার প্রথম চুক্তি হয়েছিল এক টুকরো ন্যাপকিনে!

হালের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার প্রাণ ভোমরা। আধুনিক ফুটবলে তার অবদানও অনেক। অথচ এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার চুক্তিটা হয়েছিল একটি ন্যাপকিন কাগজে। তবে আলোচনা সেই ন্যাপকিনটি এখন কোথায়? এ নিয়ে ফলাও করেই সংবাদ প্রচার হয়েছে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম ইনফোবায়ে।
২০০০ সালের সেপ্টেম্বর। লিওনেল মেসির বয়স তখন ১৩ বছর। পরিবার নিয়ে বার্সেলোনায় আসেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন দুই আর্জেন্টাইন প্রতিনিধি ফাবিয়ান সোলদিনি ও মার্তিন মনতেরো এবং স্পেনের প্রতিনিধি হোরাশিও গ্যাগিওলি। ট্রায়ালে সবাইকে চমকে দিলেন মেসি। ফলে চুক্তির আশা নিয়ে রোজারিওতে ফিরল তার পরিবার।
বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট তখন হুয়ান গাসপার্ত। তিনি ভেবেছিলেন, তাড়াহুড়া করে ছেলেটির সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিছু সময় নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গ্যাগিওলি প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে জানালেন, দ্রুত চুক্তি না হলে অন্য ক্লাবে মেসিকে নিয়ে যাবেন, এমনকি হতে পারে তা রিয়াল মাদ্রিদও।
তিন মাস পর ১৪ ডিসেম্বরের কথা। পম্পেইয়া দেল মন্তেইচ ক্লাবে বার্সার সাবেক ফুটবলার ও টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের সঙ্গে টেনিস খেলছিলেন গ্যাগিওলি। খেলা শেষে ক্লাবের ক্যাফেটেরিয়ায় লাঞ্চ করতে বসেছিলেন। তখন তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন খেলোয়াড়দের এজেন্ট হোসে মারিয়া মিনগুয়েলা যিনি বার্সেলোনায় নিয়মিতই খেলোয়াড় জোগান দেন। মেসি যে দারুণ এক প্রতিভা তা রেক্সাসকে বোঝাতে সক্ষম হলেন মিনগুয়েলা ও গ্যাগিওলি।
আর তাদের কথায় আবিষ্ট হয়ে তখনই চারকোনা এক টুকরো ন্যাপকিন কাগজ নেন রেক্সিস। লিখলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে বার্সেলোনায় মিনগুয়েলা, হোরাশিও এবং বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে কিছু বিষয়ে অমত থাকা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট অঙ্কে খেলোয়াড় লিওনেল মেসির দায়িত্ব নেওয়া হলো।’ আর এই কথার নিচে সাক্ষর করেছিলেন রেক্সাস, মিনগুয়েলা ও গ্যাগিওলি। এর সপ্তাহখানেক পর নোটারির মাধ্যমে সে চুক্তির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করেন রেক্সাস ও গ্যাগিওলি।
এরপরের গল্পটা প্রায় সবার জানা। রূপকথার মতো উত্থান এ অমিত প্রতিভার। কিন্তু দীর্ঘদিন পর আলোচনা উঠেছে সেই ন্যাপকিনটি এখন কোথায় আছে?
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘ইনফোবায়ে’ জানিয়েছে, সেই ন্যাপকিনটি এখন গ্যাগিওলির কাছে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে তিনি অ্যান্ডোরায় বসবাস করছেন। এখনও ফুটবলের প্রতিনিধি তিনি। আপাতত মার্কো আসেনসিও সহ আরও কয়েকজন ফুটবলারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। দেশটির ক্রেডিট অ্যান্ডোরা ব্যাংকে সেই ন্যাপকিনটি সুরক্ষিত অবস্থায় রেখেছেন।
সেই ন্যাপকিনটি পাওয়ার জন্য লাখ লাখ ইউরো দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন গ্যাগিওলিকে। কিন্তু তিনি হাতছাড়া করেননি। বলেছেন, ‘বার্সার জাদুঘরে এই ন্যাপকিন সংরক্ষণ করা উচিত। ক্লাবটির আধুনিক ইতিহাস পাল্টেছে ওই এক টুকরো ন্যাপকিন।’
Comments