মিছিল নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অনেক প্রার্থী
অনেক জেলাতেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এর মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন তারা।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় পাঁচ জনের বেশি না নিয়ে আসার নির্দেশনা ছিল। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বা এর পরে কোনো ধরনের শোডাউন বা সভা-সমাবেশ করতে পারবেন না।
কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে বিভিন্ন জেলায় আজ এই নির্দেশনা লঙ্ঘন হতে দেখা গেছে।
রাজশাহীতে আজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বার বার ঘোষণা দিয়ে শোডাউন বা পাঁচ জনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়পত্র জমা না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীরা শতাধিক সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ছোট দলগুলোর প্রার্থীরাও ১৫ জনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
রাজশাহী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আয়েন উদ্দিন আজ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি এই আসনের বর্তমান এমপি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার সঙ্গে শতাধিক নেতাকর্মীকে দেখা যায়। এদের অনেকেই আবার মোটরসাইকেলে ছিলেন।
রাজশাহী-২ আসনে বিএনপির মিজানুর রহমান মিনু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ছিলেন তার সঙ্গে।
সম্প্রতি বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া সাবেক বিএনপি নেতা শমসের মবিন চৌধুরীর গাড়িতে বিএনপির সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিলেটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সিলেট-৬ আসনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তিনি হামলার শিকার হন।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ র আ ম ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী আজ সকাল ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, তার সঙ্গেও অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেছিলেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিনে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রার্থী ও সমর্থকদের ভিড় দেখা গেছে। আজ সকাল ৯টা থেকে এখানে একযোগে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কে এম আলী আজমের নেতৃত্বে ঢাকার ১৫টি আসনের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ৫ থেকে ৭ জনের বেশি কর্মী-সমর্থক সঙ্গে না আনতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ এখানেও তেমন একটা মানতে দেখা যায়নি। অনেকেই প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে, সশরীরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসা প্রার্থীদের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী-সমর্থক থাকার চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন দলটির সাংগঠনিক সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অনেক কর্মী-সমর্থকের একজন ছিলেন উত্তরা জামায়াতের আমীর এডভোকেট বেলায়েত হোসেন সুজা। মনোনয়নপত্র জমা দিতে কতজন এসেছেন? এই প্রশ্নের জবাবে ‘শতাধিক এসেছেন’ বলে জানান তিনি।
ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস সশরীরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার সময় তার সঙ্গে অনেক কর্মী-সমর্থক থাকতে দেখা যায়।
বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে থাকা সমর্থকদের ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডা হতেও দেখা গেছে। এ নিয়ে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আশরাফুল আজিম বলেন, প্রার্থীদের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকরা তো থাকবেনই। তবে আমরা তাদের আহ্বান জানাবো, ইসির বিধিনিষেধ সম্পর্কে যেন তারা সতর্ক থাকেন। না হলে অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
Comments