চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগ নির্বাচনে, বিএনপি আদালতে
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে জেলায় ১৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন ভোটের প্রচারণা। ভিন্ন চিত্র বিএনপি শিবিরে।
চট্টগ্রামে ১৬টি আসনের জন্যে বিএনপি প্রাথমিকভাবে ৪০জনকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দিলেও তাদের প্রায় প্রত্যেকের নামে মামলা ঝুলছে। কেউ কেউ কারাগারে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করছেন।
কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তারা সেগুলো থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত শুধুমাত্র এই ৬৮ দিনে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ৩২ থানায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ২৫০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার জনকে। আর এর আগের মামলা তো রয়েছেই।
আমাদের চট্টগ্রাম সংবাদদাতা জানান, যে পরিস্থিতি সারাদেশে বিরাজমান চট্টগ্রামেও সেই পরিস্থিতি। চট্টগ্রাম আলাদা কিছু নয়। মহানগর শাখার সভাপতি ডা. শাহাদৎ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর জেলে রয়েছেন। শাহাদৎ-এর চট্টগ্রাম-৯ থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, আরও অনেক নেতা-কর্মী বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে রয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১১), আব্দুল্লাহ আল নোমান (চট্টগ্রাম-১০) এবং মোর্শেদ খান (চট্টগ্রাম-৮) নিজ নিজ প্রার্থীতার জন্যে মনোনয়নপত্র গতকাল (২৮ নভেম্বর) জমা দিয়েছেন। উনাদের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে।
গতকাল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-১০ এর দলীয় প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান অভিযোগ করে বলেছেন, বিরোধী নেতা কর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে। হয়রানি করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেইড দেওয়া হচ্ছে।
নোমান বলেন, “বিরোধীজোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে বারবার লেভেল প্লেইং ফিল্ড বা সবার জন্যে সমান সুযোগ সৃষ্টি করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, তারা তা করতে পারেনি। কমিশনের উচিত সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে একটি সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া।”
আমাদের সংবাদদাতা আরও জানান, যে ছয় আসনে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলোর একটি চট্টগ্রাম-৯। এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ডা. শাহাদৎ হোসেন।
তার নির্বাচনী আসনে ইভিএম ব্যবহার হতে যাচ্ছে বলে নওফেল নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ইভিএম ব্যবহারকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্যে।
এদিকে, ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টিকে ভোট কারচুপির কৌশল হিসেবে দেখছে বিএনপি। তাদের মতে, ইভিএম শুরু থেকেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তবে এমন অভিযোগের পরও গতকাল দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। চট্টগ্রামে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম-১১ আসনের জন্যে মনোনয়নপত্র জমা দিনে এসে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ লতিফ এবং বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কোলাকুলি করতে দেখা গেছে।
Comments