শীর্ষ খবর

কাজে লাগছে বিএনপি’র কৌশল

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় সবগুলোর আসনে বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী দেওয়ার কৌশলটি কাজে লাগছে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতে, এমন কৌশল না নিলে বহু আসনে বিএনপি’র প্রার্থী রাখাই মুশকিল হয়ে যেতো।
বিএনপির অবরোধ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় সবগুলোর আসনে বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী দেওয়ার কৌশলটি কাজে লাগছে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতে, এমন কৌশল না নিলে বহু আসনে বিএনপি’র প্রার্থী রাখাই মুশকিল হয়ে যেতো।

নির্বাচনে ২৯৫টি আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে ৬৯৬ জনকে। মাত্র ৩৬ আসনে দলটি দিয়েছে একক প্রার্থী। আর বাকি সবগুলোতে রয়েছে একাধিক।

বিএনপি’র নীতি-নির্ধারকরা আশংকা করেছিলেন যে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় বিভিন্ন কারণে দলের অধিকাংশ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যেতে পারে।

তাদের সেই আশংকাই সত্য হয় যখন দেখা যায় যে বিএনপি মনোনীত ১৪১ ব্যক্তির মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে। এমনকি, যাচাই-বাছাইয়ের কারণে ছয়টি আসনে দলটির কোনো প্রার্থীই টিকে থাকতে পারেননি। সেই আসনগুলো হলো: বগুড়া-৭, জামালপুর-৪, রংপুর-৫, মানিকগঞ্জ-২, ঢাকা-১ এবং শরিয়তপুর-১।

মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর দেখা যাচ্ছে যে ৮৮ আসনে বিএনপি’র একক প্রার্থী রয়েছে। ১৫১ আসনে রয়েছেন দুজন প্রার্থী এবং ৪৮ আসনে রয়েছেন তিন থেকে চারজন।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের কৌশলটি কাজে লেগেছে।”

দলের ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, “সরকার আমাদের কোনো দাবিই মেনে নেয়নি। আমাদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে ছিলো দলের প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া।”

“আমাদের আশংকা ছিলো সরকার নানা রকম বাধা সৃষ্টি করবে। নির্বাচন থেকে আমাদের সরিয়ে রাখার জন্যে নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রভাব ফেলে আমাদের দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করে দিতে পারে। কিন্তু, আমাদের কৌশলটিই সুফল বয়ে এসেছে।”

দলের অপর ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু-ও একই মত প্রকাশ করেছেন।

বিএনপি’র হাই-কমান্ডের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো সবগুলো আসনে নিজেদের প্রার্থী টিকিয়ে রাখা। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর দলের নেতারা মনে করছেন যে দলটির পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত মাঠে টিকে থাকা।

দলের জন্যে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো প্রার্থীরা স্বাধীনভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন কী না।

বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও দেখা যাচ্ছে পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আশংকা করছি যে আমাদের অধিকাংশ প্রার্থী যেহেতু বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত তাই তারা পুলিশি হয়রানির শিকার হতে পারেন।”

“এ কারণে নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি হচ্ছে পুলিশি হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং নির্বাচনী প্রচারণার জন্যে সবার জন্যে সমান সুযোগ সৃষ্টি করা,” যোগ করেন এই বিএনপি নেতা।

শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি

সূত্র জানায়, শরিক ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্যে ৬০ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। ইতোমধ্যে জোট শরিক জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ২০টি আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে। সেই নেতারা ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিবেন। তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণও করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

জামায়াতের পর জোটের অপর শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্যে সবচেয়ে বেশি আসন ছাড়তে হতে পারে বিএনপিকে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিস্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে গত ৩ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে, বিএনপি’র কাছে গণফোরাম ২৩টি আসন চেয়ে একটি তালিকা দিয়েছে। দলটিকে পাঁচটি আসন ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বিএনপি। সেই হিসাবে ঢাকা-৬ আসনের জন্যে সুব্রত চৌধুরী, হবিগঞ্জ-১ এর জন্যে রেজা কিবরিয়া, ঢাকা-৭ এর জন্যে মোস্তফা মহসীন, মৌলভীবাজার-২ এর জন্যে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এবং ঢাকা-১৮ এর জন্যে অপর একজনকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি নীতিগতভাবে চারটি আসন মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের জন্যে এবং চারটি আসন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-রব)-এর জন্যে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে। এছাড়াও, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একটি অংশ ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেওয়ায় তাদেরকেও একটি আসন ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago