মাঠ পর্যায়ের অবস্থা খুবই খারাপ: মওদুদ, বিএনপির কাজই অহেতুক অভিযোগ করা: তোফায়েল

Tofail and Moudud
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ততোই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর মধ্যে, প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধাদান, গাড়িবহরে হামলা, মিছিলে গুলি, বোমা এবং পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে দলীয় কর্মীদের মারা যাওয়ার মতো ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করছে বিরোধীদল বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়গুলো নিয়ে আজ (১৩ ডিসেম্বর) দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

মওদুদ আহমদ অভিযোগ করে বলেন, “মাঠ পর্যায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। আমি নিজেই আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না। শুধু আমার এলাকায় না, সমগ্র বাংলাদেশেই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা মোটর সাইকেলে করে শোডাউন দিয়ে বেড়াচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে নির্বাচন কী করে সম্ভব?”

নির্বাচনকালীন এই সময়ে পুলিশের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মওদুদ বলেন, “পুলিশ সম্পূর্ণভাবে সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিনা কারণে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে, গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে।”

বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালানো, হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বরং তারাই আমাদের গাড়িবহরের উপর অতর্কিতে হামলা চালাচ্ছে। আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করছে, নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে। উল্টো আবার ভুক্তভোগীদের নামেই মামলা দিচ্ছে।”

“এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি ক্ষমতায় নেই। আমাদের কি সেই শক্তি আছে, যে ক্ষমতাসীনদের উপর চড়াও হবো? আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই তাদের নেতা-কর্মীরা মারা যাচ্ছে,” মন্তব্য মওদুদের।

সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম কোনো পরিবেশ নেই জানিয়ে মওদুদ বলেন, “এবারের নির্বাচন মানুষের সামনে একটি সুযোগ হিসেবে এসেছিল। মানুষ আশা করেছিল নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এমন ভয়ঙ্কর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে যে মানুষের সে আশাও বিনষ্ট হওয়ার পথে। আওয়ামী লীগ চাইছে, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে না যেতে পারে। এই সুযোগে খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো একচেটিয়া ফল ঘোষণা করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। এর চেয়ে বড় প্রহসন আর হতে পারেনা।”

দেশে নির্বাচনকালীন সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “নির্বাচনী পরিবেশ তো ভালোই রয়েছে দেখছি। আমার এলাকা ভোলা অত্যন্ত শান্ত আছে। যদিও দেশের কিছু জায়গায় অল্প-স্বল্প গণ্ডগোল হয়েছে। নির্বাচনের আগে আগে এরকম হয়ই, এগুলো আগেও হয়েছে। এ নিয়ে তেমন একটা শোরগোল বাধানোর প্রয়োজন নেই।”

বিএনপিকে মাঠে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না, সরকারী দলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বিএনপিকে কোথায় বাধা দেওয়া হচ্ছে? তাদের নেতারা তো মাঠেই আসছেন না। গত ১০ বছর ধরে যারা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় একবারের জন্যও আসেননি, তারা তো এমনিতেই বিব্রত বোধ করবেন। এটাই স্বাভাবিক।”

ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের নেতারা নিয়মিত এলাকায় গিয়েছি। এখনও জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছি। আমরা যেখানেই যাই, হাজার হাজার লোক এসে ভিড় করেন। আমরা তাদের কথা মন দিয়ে শুনি। এ কারণেই তারা আমাদের পছন্দ করেন।”

দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি নেই জানিয়ে তোফায়েল আরও বলেন, “দেশ তো ভালোই চলছে। বিনা কারণে কোনো মামলা নেই, গ্রেপ্তার নেই। কিন্তু, বিএনপি আমলে দেশে সীমাহীন অত্যাচার হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই তারা মানুষ পিটিয়েছে, চোখ তুলে ফেলেছে, ধর্ষণ করেছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে, বোমা মেরেছে।”

“বিএনপির কাজই অহেতুক অভিযোগ করা। ২০০১ এর পর মানুষ তাদের নিষ্ঠুর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, নারী ধর্ষণের কথা ভোলেনি। এই কারণেই দেশের মানুষ আজ তাদের ক্ষোভের প্রতিদান দিচ্ছে,” যোগ করেন তোফায়েল।

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago