অপরাধীদেরকে ভোট দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের পরিবারের সদস্য, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ এবং হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় সাজা প্রাপ্তদের মনোনয়ন দেয়ায় বিএনপি’র কঠোর সমালোচনা করেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, “তারা আজকে দেশের রাজনীতিটাকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “আজকে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য একটি রাজনৈতিক দল যত রকমের অপরাধের সাথে যুক্ত। কেউ পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর দোসর কেউ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বা তাদের পরিবারের সদস্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামী- তাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করেছে তাদের নির্বাচিত করে তারা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাবে?”
তিনি বলেন, “আমেরিকার কংগ্রেস থেকে একটি তালিকা পাঠিয়েছে সেখানেও জঙ্গিবাদী হিসেবে এদের নাম রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই কানাডার আদালত বিএনপিকে একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।”
“এরা যদি নির্বাচিত হয়ে দেশের ক্ষমতায় আসে তাহলে সেই দেশের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা কিভাবে থাকবে, এদেশে শান্তি কিভাবে থাকবে, অগ্রগতি কিভাবে হবে, কোনদিনও হবে না,” যোগ করেন তিনি।
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ওয়াদা ছিল জাতির কাছে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করে ’৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করি এবং অনেকের বিচারের রায় ও কার্যকর হয়েছে।”
তিনি বলেন, “কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকে আমরা দেখি যারা এই মানবাধিকারবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত তাদেরই পরিবারবর্গকে, আপনজনকে নিয়ে বিএনপিসহ জোট করা হয়েছে। সেই জোটে অনেকেই এখন আছে।”
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলত্যাগ করে এবং আদর্শ বিচ্যুত হয়ে গুটিকতক নেতৃবৃন্দের ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনের সমালোচনা করে বলেন, “তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যারা এতো বড় অপরাধ করলো যে পাকিস্তানী বাহিনীকে আমরা পরাজিত করলাম তাদেরই দোসরদেরকে ধানের শীষ দেয়া হলো। আর যারা একদা আমাদের সাথে ছিল আজকে চলে গেছে তারা কিভাবে নির্বাচন করবে। আর কিভাবেই বা নির্বাচন করে।”
“এ প্রশ্নের উত্তর তারা জাতির কাছে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না,” যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে এসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, তাদের দোসর এবং জঙ্গিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের প্রত্যাখ্যান করারও উদাত্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, “আমি দেশবাসীকে বলবো অপরাধীদেরকে ভোট দেবেন না, এই অপরাধীরা বাংলাদেশে যেন আর কখনও নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে আসতে না পারে । যে সব এলাকায় তারা দাঁড়িয়েছে (নির্বাচনে) তাদেরকে চিহ্নিত করুন এবং তাদেরকে একেবারে বয়কট করে দিন।”
“এরা ক্ষমতায় আসলে এদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে, এদেশের ভাগ্য গড়ার জন্য আজকে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নটা হচ্ছে সেটাও থেমে যাবে,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
Comments