এক মানুষখেকো মানুষের গল্প

cannibal case accused
আদালতে দুই অভিযুক্ত। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকার এক ‘কবিরাজ’ গত বছর দেশটির পুলিশ প্রশাসনকে বিস্মিত করে দিয়েছিলেন এই বলে যে, “মানুষের মাংস খেতে খেতে বিরক্ত লেগে গেছে।” পুলিশ সদস্যদের কষ্ট হয়েছিলো সেই ব্যক্তির কথা বিশ্বাস করতে।

সেই কবিরাজ নিনো মবাথা যখন সঙ্গে আনা থলে থেকে মানুষের হাত-পা বের করে দেখালেন তখন তার কথা বিশ্বাস করেছিলো পুলিশ। এমনকি, কবিরাজ তাদেরকে নিয়ে আসে কওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের ইস্টকোর্ট শহরে একটি বাড়িতে যেখানে আরও মানুষের দেহাংশ ছিলো।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত ‘মানুষের মাংস’ খাওয়ার এই মামলায় কবিরাজ নিনো মবাথা (৩৩) এবং অপর একজন লুনগিসানি মাগুবানে (৩২) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও, অপর একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিলো।

তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, তিনজনই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাসেবা

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গত বছর জানেলে হ্লাৎশ্বায়ো নামের এক নারীকে হত্যার দায়ে পিটারমারিৎজবুর্গ উচ্চ আদালতের বিচারক পিটার ওলসেন দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, সেই দুই ব্যক্তি “জঘন্যতম অপরাধ” করেছেন।

ন্যাশনাল প্রসিকিউটিং অথরিটির মুখপাত্র নাতাশা রামকিসুন-কারা সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর মবাথা মানুষের মাংস খাওয়ার অভিযোগটি অস্বীকার করেছিলেন। তাই কৌঁসুলিরা একে একটি হত্যা মামলা হিসেবে নিতে চান।

মরদেহের অঙ্গহানি একটি ফৌজদারি অপরাধ তবে ‘নরমাংস’ ভোজনের কোনো বিষয়ে সরাসরি কোনো আইন দক্ষিণ আফ্রিকায় নেই।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, মাগুবানে এসেছিলো কবিরাজ মবাথার কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাসেবা ‘মুটি’ নেওয়ার জন্যে- যাতে সে সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। তখন মবাথা পরামর্শ দেয়- এর জন্যে একজন নারী বা শিশুর রক্ত প্রয়োজন। কেননা, ‘পূর্ব পুরুষেরা তা চেয়েছে।’

দুঃস্বপ্নের জঞ্জাল

কৌঁসুলিরা বলেন, রোগী মাগুবানের সহায়তায় কবিরাজ মবাথা ২৫ বছর বয়সী নারী হ্লাৎশ্বায়োকে হত্যা করেন। তাকে টুকরো টুকরো করে হত্যা করার পর তার শরীরের কিছু অংশ দিয়ে ওষুধ বানানো হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম উইটনেস জানায়, বিচারক বলেছেন, “এই মামলায় যা দেখানো হয়েছে তা সত্যই জঘন্য একটি ঘটনা। এটি দুঃস্বপ্নের জন্ম দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেমন প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত তা ধারণা করা যায় না। কেউ হয়তো নিজেকে অপরাধমুক্ত করে ফেলবেন, আবার পরমুহূর্তে অন্য কিছু ভাববেন।”

Comments

The Daily Star  | English

Iran fires back at Israel after onslaught targets nuclear facilities

Air raids sirens and explosions rang out across Israel after Prime Minister Benjamin Netanyahu took to the airways to issue a word of caution, saying he expected "several waves of Iranian attacks" in response

10m ago