দিনভর নাটকীয়তার পর ঢাকার পথে লতিফ সিদ্দিকী
আমরণ অনশনরত টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ (১৯ ডিসেম্বর) সকালে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয় বলে জানান টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন।
কিন্তু, বেলা ১২টার দিকে তিনি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসা করানোর কথা বলে হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক বেরিয়ে আসেন। এখন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
আমাদের টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটের দিকে লতিফ সিদ্দিকীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোফাজ্জল হোসেনের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু, ওই অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেবেন বলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে চান।
সংবাদদাতা আরও জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লতিফ সিদ্দিকীকে ছাড়তে রাজি না হওয়ায়, ‘তার কোনো ক্ষতি হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ মর্মে একটি ‘বন্ড’ সই করে তিনি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর, ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য লতিফ সিদ্দিকী নিজেই হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্সে উঠে পড়লে, অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করে অন্তত ৪০ মিনিট আটকে রাখে পুলিশ।
এর পর, লতিফ সিদ্দিকী অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে দুই-তিনশো গজ দূরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের দিকে হাঁটা শুরু করেন এবং পুনরায় সেখানে অবস্থান নেবেন বলে জানান। এ সময়ও পুলিশের সদস্যরা তাকে বাধা দিয়ে ১০-১৫ মিনিট আটকে রাখেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি কোথাও যেতে পারবেন না। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে লতিফ সিদ্দিকীর বেশ কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ সরে গেলে তিনি নিজেই হেঁটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারপরও পুলিশের একটি গাড়ি তাকে অনুসরণ করে পেছন পেছন গিয়ে তাকে গাড়িতে ওঠার অনুরোধ করলে তিনি গাড়িতে ওঠেন। পুলিশের গাড়ি আবার তাকে হাসপাতালের গেট পর্যন্ত নিয়ে আসে। এরপর, লতিফ সিদ্দিকী আবার অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বসলে সেটিকে আবার বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত আটকে রাখে পুলিশ।
অবশেষে, পুলিশ আর বাধা না দেওয়ায় দুপুর আড়াইটার দিকে আব্দুল হাই নয়ন ও সোহাগ নামে দুই ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে লতিফ সিদ্দিকী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তখনও পুলিশের একটি গাড়িকে লতিফ সিদ্দিকীর অ্যাম্বুলেন্সটিকে অনুসরণ করতে দেখা যায়।
Comments