ভোটের দিন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ না শ্লথ?

ভোটের দিনে মোবাইল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করাসহ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চারটি বিকল্প দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং যোগাযোগের জন্যে ব্যবহৃত সব মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করা, মোবাইল ইন্টারনেটকে টুজিতে নামিয়ে এনে থ্রিজি এবং ফোরজি ভোটের দিনে বন্ধ রাখা এবং নির্দিষ্ট এলাকা-ভিত্তিক বিভিন্ন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া।

আজ (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এ বিষয়ে বিটিআরসি এবং কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার বৈঠক রয়েছে। যেখানে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন মোবাইল ইন্টারনেটবিষয়ক সিদ্ধান্ত হতে পারে।

এর আগে এক বৈঠকে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে বিটিআরসি’র কাছে কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব চাইলে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।

বিটিআরসি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হক এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তাদের একজন মহাপরিচালক নির্বাচন কমিশনের সামনে ইন্টারনেট বন্ধ অথবা কিছু সেবা বন্ধ বিষয়ক চারটি বিকল্প তুলে ধরবেন এবং নির্বাচন কমিশনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

“অন্তত এই ইস্যুতে আমাদের কিছুই করার নেই। নির্বাচন কমিশন আমাদেরকে যেভাবে বলবে আমরা সেভাবেই কাজ করবো। যে কোনো বিকল্পের জন্যেই আমাদের ২৪ ঘণ্টার টিম তৈরি করা আছে,” বলছিলেন জহুরুল হক।

ভোটের দিনে ইন্টারনেট পরিস্থিতি বিষয়ে বিটিআরসি মূলত মোবাইল ইন্টারনেট নিয়েই কথা বলেছে তবে ব্রডব্যান্ড নিয়ে তারা কোনো কিছুই বলেনি।

বিটিআরসি বলছে, মোবাইল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করতে সময় লাগবে দুই মিনিট। তবে সেটি হলে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নাগরিক সেবার ওপর নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কারণ এটিএম থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি অনেক কিছুই এখন ইন্টারনেটে চলে। গোটা বিশ্বের কাছেও তখন বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

তারা বলছেন, সেবা খাতের অনেকটাই এখন ইন্টারনেটের ওপরে চলে এসেছে। ফলে পুরো ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না।

শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করতে বিটিআরসি’র ২০ মিনিটের মতো সময় লাগবে। আর টুজি চালু রেখে থ্রিজি এবং ফোরজি বন্ধ করতে গেলে একটু বেশি সময় লাগবে।

দেশে বর্তমানে আট কোটি ৮৩ লাখ মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট আছে। যার মধ্যে সাত কোটি বেশি ফোনে থ্রিজি বা ফোরজি সংযোগ আছে।

মোবাইল ইন্টারনেট টুজিতে নামিয়ে আনলে প্রকৃতপক্ষে সেটি দিয়ে ইউটিউব তো চলবেই না এমনকি ফেসবুক ছবি আপ করা বা ফেসবুক ব্রাউজের সময় ছবিও দেখা যাবে না।

এর আগে গত আগস্ট মাসে সড়ক নিরাপদ করার দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীদের করা আন্দোলনের সময়ও সরকার একবার ২৪ ঘণ্টার জন্যে মোবাইল সেবা টুজিতে নামিয়ে এনেছিলো।

অন্যদিকে এলাকাভিত্তিক সাইট ধরে ধরে বন্ধ করতে গেলে দুই ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।

এসব কারিগরি বিষয় পরীক্ষার জন্যে বিটিআরসি’র কয়েকটি প্রতিনিধি দল এর মধ্যে সবগুলো মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক পরীক্ষা করে এসেছে। কোনো সেবা বন্ধ করতে কতো সময় লাগবে সেটিও তারা পরীক্ষা করেছে।

এর আগে নির্বাচন কমিশন চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠকে মোবাইল সেবা টুজিতে নামিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজই হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran says it fires missiles at US airbase in Qatar, explosions heard over Doha

Iran vowed to defend itself a day after the US dropped bombs onto the mountain above Iran's Fordow nuclear site

1d ago