‘সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে, কই? কোনো পত্রিকায় তো ওঠেনি’- দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে ইসি সচিব
ঢাকার নবাবগঞ্জে দুর্বৃত্তের হামলায় অন্তত ১২ জন সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনায় কেবল মামলা হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
গতরাতের এ হামলার ব্যাপারে জানতে চেয়ে আজ (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ইসি সচিবকে ফোন করা হলে তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না- বলে জানান দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে। তারপর তাকে ঘটনাটি জানানো হলে তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে, কই? কোনো পত্রিকায় তো উঠেনি। কেউ মৌখিক বা লিখিত অভিযোগও দেয়নি। কী করে জানবো?”
তবে, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের মামলা করার পরামর্শ দিয়ে ইসি সচিব বলেন, “সব ক্ষেত্রেই ইসির কাছে অভিযোগ দিতে হবে কেন। ইসি তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগে থেকেই এসব ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েই দিয়েছে। সাংবাদিকরা স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। এখন তো মাঠে সেনাবাহিনীও রয়েছে। তাদের কাছেও অভিযোগ করতে পারেন। আর না হলে আমাদের ইলেক্টোরার ইনকোয়ারি কমিটি করা আছে। সেখানে লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল আজ সকালে বলেন, “হামলার ঘটনাটি জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আহত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। হামলাকারীদের কাউকে তারা চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো মামলা করেনি। তারপরও আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে ঢাকার নবাবগঞ্জে দুর্বৃত্তের হামলায় অন্তত ১২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। গতকাল (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নবাবগঞ্জ থানার কাছের একটি রেস্ট হাউজে সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা করা হয়। হামলাকারীরা এ সময় ১৬টি গাড়ি ভাংচুর করেছে বলেও জানা গেছে।
দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার সিরাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৩০ থেকে ৩৫ জন দুর্বৃত্তের একটি দল মুখে মাফলার বেঁধে হঠাৎ ওই রেস্ট হাউজে ঢুকে সেখানে অবস্থানরত বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা ও যুগান্তরের সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ চালায়।”
তিনি জানান, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তরের প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক ঢাকা থেকে নবাবগঞ্জে গিয়ে কলাকোপা এলাকায় শামীম গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন।
এ ঘটনার পর থেকে যুগান্তরের ধামরাই সংবাদদাতা শামীম খানের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন সিরাজুল ইসলাম।
সিরাজুল বলেন, “দুর্বৃত্তরা ওই রেস্ট হাউজের তৃতীয় তলার বিভিন্ন রুমে গিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে হামলা চালায়। এ সময় ভবনটির নীচে পার্কিং করে রাখা ১৬টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হোটেলে অবস্থানরত সাংবাদিকদের প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিবেদক সুশান্ত সিনহা বলেন, “তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।”
যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার ইয়াসিন বলেন, “হামলাকারীরা রড, হকিস্টিক, লাঠি এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করে।”
Comments