‘নিয়ন্ত্রণমূলক নির্বাচনী পরিবেশ’ নিয়ে ১৬টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের উদ্বেগ
বাংলাদেশে রোববারের নির্বাচনে ‘নিয়ন্ত্রণমূলক পরিবেশ’ ও ‘দমন-পীড়ন’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ১৬টি আন্তর্জাতিক সংগঠন। নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনগুলো আজ এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।
‘অগণতান্ত্রিক নির্বাচনী পরিবেশের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে সুশীল সমাজ, বিরোধী দল ও গণমাধ্যমের ওপর বাংলাদেশ সরকার খড়গহস্ত হয়েছে।” এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সীমিত হয়ে আসছে ও আসন্ন নির্বাচনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
গণমাধ্যমের খবরের বরাতে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর বিরোধী দলের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে ৩০ বার, ১৫৯ টি নির্বাচনী আসনে ২০৭টি সহিংস ঘটনা ঘটেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৪৩ জন প্রার্থীর ওপর হামলায় ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের ১৭ জন প্রার্থী গ্রেপ্তার ও ২৩টি আসনে আদালতের নির্দেশে বিএনপি প্রার্থীশূন্য হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রীক সহিংসতায় পাঁচ জন নিহত ও আরও ২৬৮২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর হামলা, দলের কার্যালয় মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া, নারী প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ ও বিরোধী দলের প্রচারণায় হামলা হয়েছে।
তবে যে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন তাদের পরিচয় বা তারা কোনো দলের সমর্থক তা উল্লেখ করা হয়নি এই বিবৃতিতে।
এসব হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশি ভোটারদের মনে আতঙ্ক তৈরি করে লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ডের সম্ভাবনা বিনষ্ট করা হয়েছে বলেও সংস্থাগুলোর যৌথ বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বিরোধী দলগুলোর সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়, গত নভেম্বর থেকে পুলিশ এযাবৎ তাদের ২১ হাজার কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, নির্বাচনী তফসিলের পর দেশে ব্যাপক হারে গায়েবি মামলার সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিরোধী জোটের নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার ও ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
সেই সঙ্গে সময়মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অনুমতি না দেওয়া, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের কাজে বাধা সৃষ্টি করার মতো গুরুতর অভিযোগ থাকার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতদানকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে: এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেশকশন, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অফ ডমেস্টিক ইলেকশন মনিটরস, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, সেন্টার ফর মনিটরিং ইলেকশন ভায়োলেন্স, শ্রীলঙ্কা; ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন নেটওয়ার্ক, পাকিস্তানসহ মোট ১৬টি সংগঠন।
Comments