মৃণাল সেন আর নেই
প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেন। কলকাতার ভবানীপুরে নিজের বাড়িতেই সকাল পৌনে ১১টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃণাল সেনের পারিবারিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বর্ষীয়ান এই নির্মাতা।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া চলচ্চিত্র অঙ্গনে। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ শোকবার্তা দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন।
মৃণাল সেন ১৯২৩ সালে ১৪ মে অবিভক্ত ভারতবর্ষের ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি।
১৯৫৫ সালে ‘রাত ভোর’ ছায়াছবির মধ্যদিয়ে নির্মাতার জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। তারপর একে একে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন নীল আকাশের নীচে, বাইশে শ্রাবণ, ভুবন সোম এর মতো দেশ বিদেশের স্বীকৃতি পাওয়া তার সৃষ্টি।
১৯৮৩ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে 'রাত ভোর' এর জন্য ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মান 'দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার' পান মৃণাল সেন। এছাড়াও হাজারো সম্মাননা পেয়েছেন জীবনে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, এক মহীরুহকে হারালো বাংলা চলচ্চিত্র। এই ক্ষতির পূরণ হবে না কোনও দিন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন মমতা।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, আসলে কী বলে যে এই শোক প্রকাশ করব সেই ভাষাইতো আমার জানা নেই। আমি নীরব, নিশ্চল এই খবরে ভেঙে পড়েছি আমিও।
অপর্ণা সেন বলেন, দেখুন তাঁকে বাবার মতো শ্রদ্ধা করেছি। মৃণাল সেন নেই ভাবতে পারছি না আমিও।
মমতা শঙ্কর বলেন, আমি আজ যা কিছু এই যে আপনি ফোন করে আমার সঙ্গে কথা বলছেন, কেন আমি মমতা শঙ্কার তাই। কিন্তু এই আমিকে নির্মাণ করেছেন মৃণাল সেন। তাই বুঝতে পারছেন, তাঁর চলে যাওয়া মানে আমিতেই বড় ধাক্কা।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা আর শোক নিতে পারছি না। একের পর এক গুণীজন, প্রথিতযশাদের প্রয়াণ মন বিষাদগ্রস্ত করে তুলছে।
প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহে প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রয়াত হয়েছেন।
মৃণাল সেনের ভাগ্নে গঙ্গাপ্রসাদ দাশগুপ্ত জানান, মৃণাল সেনের ছেলে কুণাল সেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসার পর শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
মৃণাল সেনের ইচ্ছানুসারে তার মরদেহে কেউ ফুল দিচ্ছেন না। তাঁর দেহ রাখা হবে কলকাতার পিস ওয়ার্ল্ডে।
Comments