লো স্কোরিং ম্যাচে রংপুরকে হারিয়ে শুরু চিটাগাং ভাইকিংসের

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মাশরাফি মর্তুজার প্রথম মাঠে নামা, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের ফেরা, রংপুর রাইডার্সের ডেরায় তারকাদের ভিড় মিলিয়ে বিপিএলের প্রথম ম্যাচ বাড়তি আগ্রহের রসদ ছিল অনেক। তবে মাঠের খেলায় তার ছিটেফোঁটাও মেলেনি। খেলার আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেলুন উড়েছে, রঙের ঝলকানি লেগেছে কিন্তু চার-ছক্কার ঝড় উঠেনি। লো স্কোরিং ম্যাচে শেষ ওভারে গিয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুরকে হারিয়েছে চিটাগাং ভাইকিংস।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের রংপুর মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। ওই রানও তুলতে ধুঁকেছে ভাইকিংস। ৭ উইকেট খুইয়ে শেষ ওভারে গিয়ে জিতেছে তারা।

আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন রংপুর নেমছিল ফেভারিট তকমা গায়ে মেখেই। তবে দলে বড় তারকাদের ছড়াছড়ি খাতায় কলমে মাশরাফি মর্তুজার দলকে এগিয়ে রাখলেও মাঠের খেলায় মিলল ভিন্ন ছবি। ব্যাটিংয়ে নেমে চিটাগাং ভাইকিংসের সঙ্গে দাঁড়াতেই পারেনি তারা।

ছোট লক্ষ্য পেয়ে সাবলীল শুরু পায়নি চিটাগাংও। ক্যামেরন ডেলপোর্টকে তুলে নিয়ে মাশরাফি আনেন প্রথম আঘাত। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিপিএলে ফেরা  আশরাফুলের দিকে বাড়তি নজর ছিল। খুব মামুলি রান তাড়ায় ছিল দল, ওয়ানডাউনে নামা আশরাফুলের উপর  তাই ছিল না কোন চাপ। কিন্তু ফেরাটা সুখকর হয়নি তার। শফিউল ইসলামের বল আড়াআড়ি ব্যাটে উড়াতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি। টপ এজ হয়ে ক্যাচ যায় থার্ড ম্যানে।

এলোমেলো ব্যাট করে কিছু রান এনে দিয়েছিলেন আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ। তবে বেশিক্ষণ টেকেননি তিনি। টেকেননি সিকান্দার রাজাও। তিনি ফেরেন মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়ে, মোসাদ্দেক হোসেন-নাঈম হাসানরা দেখাতে পারেননি মুন্সিয়ানা। মুশফিক টিকেছিলেন বলে দুশ্চিন্তার কারণ ছিল না ভাইকিংসের। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে তিনি ফিরতেই কিছুটা ঘুরে যায় ম্যাচ। কিছুটা রোমাঞ্চ জাগিয়েও অবশ্যই প্রত্যাশিতভাবেই জিতেছে চিটাগাং। 

এর আগে টস জিতে রংপুরকে ব্যাট করতে পাঠান ভাইকিংস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। নামিদামি তারকায় ঠাসা রংপুর এদিন একাদশে পায়নি ক্রিস গেইলকে। সকালেই বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় ভ্রমণক্লান্তিতে নামতে পারেননি তিনি। তবে ছিলেন অ্যালেক্স হেলস, রাইলি রুশো, রবি বোপারার মতো ব্যাটসম্যান।

এতসব তারকার  নামডাকের ভার ছাপিয়ে নায়ক রবি ফ্রাইলিঙ্ক। দক্ষিণ আফ্রিকান এই মিডিয়াম পেসারের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে চ্যাম্পিয়ন রংপুরের ইনিংস। চার ওভার বল করে মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট পান তিনি।

রংপুরের হয়ে প্রথমবার বিপিএলে নেমে ইংলিশ ওপেনার হেলসের হয়েছে ভুলে যাওয়ার মতো শুরু। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই এলবিডব্লিও হয়ে ফেরত যান তিনি। দুই বল পরই কোন রান করেই ফ্রাইলিঙ্কের বলে স্টাম্প উড়ে যায় মোহাম্মদ মিঠুনের।

আবু জায়েদ রাহির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ চেন রাইলি রুশো। হেলসের সঙ্গে ওপেন করতে নামা মেহেদী মারুফও পারেননি। ফ্রাইলিঙ্কের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে তোলে দেন সহজ ক্যাচ। আশা দেখাতে পারেননি বেনি হাওয়েল। অফ স্পিনার নাঈম হাসানের বলে তিনি হয়েছেন কুপোকাত।

আসা-যাওয়ার মিছিলে ৩৫ রানেই ৭ উইকেট হারায় রংপুর। তখন তাদের ৫০ পেরুনোও বড় শঙ্কার। অষ্টম উইকেটে সোহাগ গাজীকে নিয়ে ৪৯ রানের জুটিতে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ান রবি বোপারা। পুরো ইনিংস দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন কেবল তারা দুজন। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৩ চার আর দুই ছক্কায় ৪৪ করে যান বোপারা। নয়ে নামা সোহাগ গাজী করেছেন ১৭ বলে ২১।

এই দুজনের লড়াইয়ের পরও ম্যাচ জেতার মতো পূঁজি পায়নি মাশরাফির দল। মন্থর পিচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বোলাররা লড়াই করেছিলেন, তবে থেকে যায় আরও ২০ রানের আক্ষেপ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ৯৮ (মারুফ ১, হেলস ০,  মিঠুন ০,  রুশো ৭, বোপারা , হাওয়েল ৮, রেজা ৩,  মাশরাফি ২, সোহাগ ২১, নাজমুল ৪, শফিউল ১ ; রাহি ২/৩০ , ফ্রাইলিঙ্ক ৪/১৪, খালেদ ১/১৫, নাঈম ২/১০, সানজামুল ০/২৭ )

চিটাগাং ভাইকিংস:   ১৯.১ ওভারে ১০১/৭ (শেহজাদ ২৭, ডেলপোর্ট ৮, আশরাফুল ৩, মুশফিক ২৫ , রাজা ৩, মোসাদ্দেক ২, নাঈম ১০, ফ্রাইলিঙ্ক ১২, সানজামুল ৭  ; মাশরাফি ২/২৪, গাজী ০/১৮, শফিউল ১/১৯, নাজমুল ১/১৭, হাওয়েল  ১/১৩, ফরহাদ ১/১০)

ফল: চিটাগাং ভাইকিংস ৩ উইকেটে জয়ী।

 

Comments

The Daily Star  | English
G7 statement on Israel Iran war

Sirens sounded after missiles launched from Iran, says Israeli army

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

13h ago