মোস্তাফিজ জাদুতে মাশরাফির রংপুরকে হারাল রাজশাহী
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/rajshahi_1.jpg?itok=4SiOiLUL×tamp=1547378486)
শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল ৯ রানের। হাতে ছিল ৪ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো। সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান ফরহাদ রেজা। তবে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান বল করছিলেন বলেই আশাটা জিইয়ে ছিল রাজশাহী কিংসের। আর নিজের দিনে মোস্তাফিজ কি করতে পারেন তা আরও একবার দেখালেন। ৫ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় উপহার দিলেন দলকে।
ভুলটা প্রথম বলেই করে ফেছিলেন রুশো। সিঙ্গেল নিয়ে অপর প্রান্তে চলে যান। এরপর টানা চারটি বলে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি ফরহাদ রেজা। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রাজশাহীর। পঞ্চম বলে বাই রানের সুবাদে প্রান্ত বদল করলেও লাভ হয়নি তাদের। শেষ বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি রুশো। আসরের দ্বিতীয় জয় পায় রাজশাহী।
তবে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে এদিন এটাই ছিল আলোচনার মূল বিষয় ছিলেন দুই দলের দুই অধিনায়ক। দুইজনই স্বাভাবিকভাবে ব্যাটিং করেন সাত-আট নম্বরে। এদিন দুই জনই নেমে গেলেন ওপেনিংয়ে। কাকতালীয়ভাবে দুইজনই করলেন শূন্য।
১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চমক উপহার দেয় রংপুর। ক্যারিবিয়ান দৈত্য ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বিপিএল তো দূরের কথা, ঘরোয়া ক্রিকেটেও এর আগে কখনোই ওপেনিং করেননি অধিনায়ক। তবে ক্যারিয়ারের নতুন শুরুতে সুবিধা করে উঠতে পারেননি তিনি। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে খোঁচা মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
শেষ দুই ম্যাচে সুবিধা না করে উইকেট পারা গেইল অবশ্য এদিন দারুণ ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। রাব্বির এক ওভারেই দুটি ছক্কা ও দুটি চার মেরেছিলেন। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন সৌম্য সরকারের হাতে। তবে তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশোর সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। এ জুটি ভাঙতেই ২১ রানের ব্যবধানে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে আবার চাপে পড়ে রংপুর। এরপর নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটিতে সে চাপ সামলে নেন রুশো। কিন্তু নাহিদুল আউট হওয়ার আবার সব এলোমেলো।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন রুশো। মিঠুন করেন ৩০ রান। এছাড়া গেইলের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। রাজশাহীর পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রাব্বি ও হাফিজ। তবে উইকেট না পেলেও শেষ ওভারের জাদুতে নায়ক মোস্তাফিজই।
এর আগে টস হেরে প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে মাশরাফির তোপে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রাজশাহী। আগের দুই ম্যাচে টপ অর্ডারে নেমে ভালো করতে পারলেও এদিন মাশরাফির প্রথম বলেই ঘোরাতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে শফিউল ইসলামের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন। খালি হাতে ফেরা অধিনায়কের পথ ধরে সুবিধা করে উঠতে পারেননি আরেক ওপেনার মুমিনুল হক ও সৌম্য সরকারও। ফলে ৩৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে দলটি।
তবে চতুর্থ উইকেটে তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকির হাসানকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ। গড়েন ৫৪ রানের জুটি। তাতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দলটি। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই যেন সব এলোমেলো। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন জাকির। ৩৬ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ২৯ বলে ২৬ রান করেন হাফিজ। রংপুরের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি ও ফরহাদ রেজা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (মুমিনুল ১৪, মিরাজ ০, সৌম্য ১৮, হাফিজ ২৬, জাকির ৪২*, ইভান্স ২, ডেসকাট ১৪, উদানা ৮, সানি ১, রাব্বি ১*; গাজী ১/২৫, মাশরাফি ২/২২, নাহিদুল ০/১৪, নাজমুল ০/১৪, হাওয়েল ০/২০, শফিউল ১/১৯, রেজা ২/১৭)।
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৩০/৬ (গেইল ২৩, মাশরাফি ০, মিঠুন ৩০, রুশো ৪৪*, বোপারা ২, হাওয়েল ৪, নাহিদুল ১৬, রেজা ০*; রাব্বি ২/২২, মিরাজ ০/২৬, উদানা ১/২২, মোস্তাফিজ ০/১৭, সানি ০/১২, হাফিজ ২/২২)।
ফলাফল: রাজশাহী কিংস ৫ রানে জয়ী।
Comments