থিসারা ঝড়ের জবাব দিয়ে নায়ক মুশফিক

Mushfiqur Rahim
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাংলাদেশে এসেই থিসারা পেরেরা খেলেছিলেন বিস্ফোরক ইনিংস। তার জবাবে মোহাম্মদ শেহজাদ ধরিয়ে দিয়েছিলেন সুর। তাতে তাল মিলিয়ে শুরু করা মুশফিকুর রহিম সময়ের সঙ্গেই হয়েছেন ভয়ংকর। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে শেষ ওভারে গিয়ে জিতেছে চিটাগাং ভাইকিংস।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকায় প্রথম ধাপের শেষ ম্যাচ ছিল হাইস্কোরিং। থিসারা পেরেরার ২৬ বলে ৭৪ রানে কুমিল্লা করেছিল ১৮৪ রান। মুশফিকের ৪১ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ওই রান তুলেছে চিটাগাং। এই নিয়ে চার ম্যাচের তিনটাই জিতে দুইয়ে উঠে গেল চিটাগাং। সমান ম্যাচে দুই হার কুমিল্লার।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় যেমনটা দরকার চিটাগাং ভাইকিংসকে ঠিক তেমন শুরুই এনে দেন মোহাম্মদ শেহজাদ। তার মারকাটারি ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই ৬১ রান তুলে ফেলে ভাইকিংস। যার মধ্যে ৪৩ রানই শেহজাদের।

শহীদ আফ্রিদি এসে শেহজাদকে থামান, তার আগে ফেরেন আগের ম্যাচে ভালো করা ইয়াসির আলি ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট। তবে ছন্দে পেয়ে যান মুশফিক। তার ব্যাটেই থই খুঁজে পায় ভাইকিংস। ৩০ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো মুশফিক ৪১ বলে ৭ চার আর ৪ ছক্কায় গিয়ে থামেন ৭৫ রানে। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে বাউন্ডারি লাইনে তিনি যখন ক্যাচ দিয়ে ফিরছেন তখন দলের জিততে দরকার ৬ বলে ৭ রান।

এর আগে কুমিল্লার শুরুর দিকের ধুকপুকানির পর ছিল পেরেরা শো। ডুবতে থাকা কুমিল্লাকে ব্যাটের ঝাঁজে একাই লড়াইয়ে রাখেন লঙ্কান অলরাউন্ডার।

আগের ম্যাচে ওয়ানডাউনে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে এদিন চেনা ওপেনিংয়ে ফিরেও অচেনা তিনি। ইনিংসের একদম দ্বিতীয় বলেই রবি ফ্রাইলিঙ্ককে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।

আগের দিন রান পাওয়া এনামুল হকও ওয়ানডাউনে নেমে উইকেট থেকে বেরিয়ে উড়াতে গিয়েছিলেন। ১০ রান করা এনামুলের টপ এজ হওয়া ক্যাচ জমেছে থার্ড ম্যানে।

বিস্ফোরক এভিন লুইস ছিলেন বলেই সবার নড়েচড়ে বসার অবস্থা ছিল। কিন্তু লুইসকে পাওয়া গেল না তার চেনা চেহারায়। অনেকটা ধুঁকে ধুঁকে রান বাড়ালেন, সঙ্গী ইমরুল কায়েসও তাই। খালেদ আহমেদের বলে ইমরুল বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে দুজনের ৫৬ রানের জুটি। ইমরুল ফেরার খানিক পর স্ট্রেচারে করে বেরিয়ে যেতে হয় লুইসকেও। রান নিতে গিয়ে পেশিতে টান পড়া লুইস চিন্তা বাড়িয়ে দিয়ে যান কুমিল্লার।

লিয়াম ডসন আর শহীদ আফ্রিদিও টেকেননি খালেদের সামনে। ডসন সরে গিয়ে হন বোল্ড, আফ্রিদি আউট হন অদ্ভুতভাবে। খালেদের বাউন্সার ব্যাকফুটে খেলে হিট উইকেট হন তিনি।

এরপরেই যেন কুমিল্লার ইনিংসে নতুন প্রাণ সঞ্চার শুরু। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে নিয়ে কাজের কাজটা করেছেন থিসারা পেরেরা। তুমুল ফর্মে থাকা এই অলরাউন্ডারই এদিনই উড়ে এসে নেমে পড়েন মাঠে।

কাজের কাজ করেছেন তিনিই। মাত্র ২০  বলে হাফ ডজন ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছান। ফ্রাইলিঙ্কের এক ওভারে চার ছক্কায় নেন ৩০। ইনিংসে শেষে আট ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ৭৪ করে। তাকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও। ১৯ বলে ২৬ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটিতে ৬ ওভার ৪ বলেই উঠে যায় ৯৮ রান।

যে দলের দেড়শো পেরনো নিয়েও সংশয় ছিল তারা চলে যায় একশো আশি ছাড়িয়ে। বোলারদের ব্যর্থতায় অবশ্যই সেই রানও ডিফেন্ড করতে পারেনি কুমিল্লা।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৮৪/৫ (২০ ওভার)  (তামিম ০, লুইস ৩৮* আহত অবসর,  এনামুল ১০, ইমরুল ২৪,  ডসন ২  , আফ্রিদি ২ , সাইফুদ্দিন ২৬*,  পেরেরা ৭৪*  ; ফ্রাইলিঙ্ক ১/৪৯, নাঈম ০/২০, জায়েদ ১/৪১, খালেদ ৩/৩৪, মোসাদ্দেক ০/১৩, ০/২৫)

চিটাগাং ভাইকিংস:  ১৯.৪ ওভারে ১৮৬/৬  (শেহজাদ ৪৬, ডেলপোর্ট ১৩, ইয়াসির ৪, মুশফিক ৭৫, নাজিবুল্লাহ ১৩, মোসাদ্দেক ১২, ফ্রাইলিঙ্ক ৯ , নাঈম ১* ; হায়দার ০/৩০, মেহেদী ১/৩০, সাইফুদ্দিন ২/৪৫, ডসন ০/৩৪ , আফ্রিদি ১/১৫ )

ফল: চিটাগাং ভাইকিংস ৪ উইকেটে জয়ী।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Awami League should be punished as a party: Fakhrul

He made the remarks after visiting a BNP man undergoing treatment at National Institute of Neurosciences and Hospital

1h ago