তামিমের ব্যাটে কুমিল্লার চতুর্থ জয়
আসরের শুরু থেকেই বোলিংটা আশানুরূপ হলেও ব্যাটিং বিভাগে ব্যর্থ ছিল খুলনা। এদিন একাদশে কিছু পরিবর্তন এনে নেওয়া হয় আল-আমিন জুনিয়রকে। তাতেই সাফল্য পায় দলটি। কিন্তু উল্টোটা ঘটে বোলিং বিভাগে। শুরুতে বোলাররা ছিলেন চরম ব্যর্থ। শেষ দিকে নিয়ন্ত্রণ খুঁজে পেলেও সুবিধা করে উঠতে পারেননি। উল্টো দিকে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সের ওপেনার তামিম ইকবাল। তাতেই হার মানতে হয় খুলনাকে। কুমিল্লা পায় আসরের চতুর্থ জয়।
জুনায়েদ সিদ্দিকির দুর্দান্ত এক হাফসেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহই পেয়েছিল খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করে দলটি। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই উড়ন্ত সূচনা পায় কুমিল্লা। আগের ম্যাচগুলোতে ব্যর্থতার চাদরে ঢাকা থাকা তামিম ইকবাল এদিন ফিরে পেলেন ছন্দ। করেন দুর্দান্ত এক হাফসেঞ্চুরি। এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে গড়েন শতরানের জুটি। ফলে ২ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় পায় তৃতীয় আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
মূলত ওপেনিং জুটিই বদলে দেয় ম্যাচের চিত্র। তামিমের সঙ্গে দারুণ খেলেছেন আরেক ওপেনার বিজয়ও। ফলে ওপেনিংয়ে জুটিতে আসে ১১৫ রানের বিশাল জুটি। আর এ জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি। যদিও এ জুটি ভাঙতেই হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় দলটি। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ায় ওই ওপেনিং জুটিতেই হয়ে যায় খুলনার।
তবে সাতটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ কিছুটা জমিয়ে তুলেছিলেন খুলনার বোলাররা। দারুণ বোলিং করেছিলেন দুই বিদেশি জুনায়েদ খান ও লাসিথ মালিঙ্গা। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা করতে না পারায় হার এড়াতে পারেনি দলটি। শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা এক প্রান্ত ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন।
কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেন তামিম। চলতি আসরের প্রথম ফিফটি তুলে ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। মাত্র ৪২ বলের ইনিংসে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা। ৩৭ বলে ৪০ রান করেন বিজয়। কম যাননি অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও। মাত্র ১১ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৮ রান করেন তিনি। খুলনার পক্ষে ৩২ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন জুনায়েদ।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জহুরুল ইসলামের উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় খুলনা। তবে প্রতিরোধটা দ্বিতীয় উইকেটেই গড়ে তারা। আল-আমিনের সঙ্গে আরেক ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকির ৭২ রানের জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে নেয় দলটি। এমনকি বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তারা। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
তবে চতুর্থ উইকেটে ডেভিড মালানের সঙ্গে জুনায়েদের ৫০ রানের জুটিটিতে আবার কক্ষপথে ফিরে আসে খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান সংগ্রহ করে দলটি। তবে দলীয় স্কোরটা হতে পারতো আরও বড়। শেষ দিকে কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে পারেননি। শেষ দুই ওভারে এসেছে মাত্র ১৩ রান।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেন জুনায়েদ। মাত্র ৪১ বলে ইনিংসে সমান সংখ্যক ৪টি চার ও ছক্কা মেরেছেন এ ওপেনার। ১৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংস খেলেন আল-আমিন। এছাড়া মালান করেন ২৯ রান। কুমিল্লার পক্ষে ৩৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। এছাড়া ২টি উইকেট নিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইটান্স: ২০ ওভারে ১৮১/৭ (জহুরুল ০, জুনায়েদ ৭০, আল-আমিন ৩২, মাহমুদউল্লাহ ১৬, মালান ২৯, ব্র্যাথওয়েট ১২, আরিফুল ১৩, শান্ত ১*; সাইফউদ্দিন ১/২৯, মেহেদী ০/৩৭, পেরেরা ০/২০, রিয়াজ ২/৩৪, ডসন ০/৮, আফ্রিদি ৩/৩৫, শামসুর ০/১৪)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৮৬/৭ (তামিম ৭৩, বিজয় ৪০, ইমরুল ২৮, শামসুর ১, ডসন ৪, পেরেরা ১৮*, আফ্রিদি ১২, জিয়া ০, সাইফউদ্দিন ১*; মালিঙ্গা ১/২২, মাহমুদউল্লাহ ১/২৬, জুনায়েদ ৪/৩২, ব্র্যাথওয়েট ০/৫০, তাইজুল ০/১৭, আরিফুল ০/১৩, আল-আমিন ০/১৬)।
ফলাফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৩ উইকেটে জয়ী
Comments