সিলেটকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিল রংপুর

লক্ষ্যটা বিশাল। ১৯৫ রানের। কিন্তু প্রতিপক্ষ শিবিরে যখন ক্রিস গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো তখন এ রানেও স্বস্তি পাওয়া কঠিন। পাওয়াও যায়নি। কিন্তু এ দুই ব্যাটসম্যান নয়, বরাবরের মতো এদিনও জ্বলে উঠলেন রাইলি রুশো। তবে তাকে ছাপিয়ে শেষ দিকে নায়ক হয়ে গেলেন ফরহাদ রেজা। বারবার রঙ বদলানোর ম্যাচ ৩ বল হাতে রেখে জিতে নেয় রংপুর রাইডার্স। সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে তাদের জয়টি ৪ উইকেটের।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

লক্ষ্যটা বিশাল। ১৯৫ রানের। কিন্তু প্রতিপক্ষ শিবিরে যখন ক্রিস গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো তখন এ রানেও স্বস্তি পাওয়া কঠিন। পাওয়াও যায়নি। কিন্তু এ দুই ব্যাটসম্যান নয়, বরাবরের মতো এদিনও জ্বলে উঠলেন রাইলি রুশো। তবে তাকে ছাপিয়ে শেষ দিকে নায়ক হয়ে গেলেন ফরহাদ রেজা। বারবার রঙ বদলানোর ম্যাচ ৩ বল হাতে রেখে জিতে নেয় রংপুর রাইডার্স। সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে তাদের জয়টি ৪ উইকেটের।

অথচ এ রংপুরের বিপক্ষে দারুণ খেলে ঘরের মাঠে জয়ে ফিরে এসেছিল সিলেট। কিন্তু ফিরতি ম্যাচে তাদের বিপক্ষে কুলিয়ে উঠতে পারলো না দলটি। যদিও আগে ব্যাট করে বড় লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছিল তারা। কিন্তু রুশোর দানবীয় ব্যাটিংয়ের পর শেষ দিকে রেজার আগ্রাসী ব্যাটে প্রতিশোধ নেয় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সাত ম্যাচে এটা তাদের তৃতীয় জয়। অপর দিকে সাত ম্যাচে এটা সিলেটের পঞ্চম হার।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। শুরুতেই খালি হাতে ফিরে যান ক্যারিবিয়ান দৈত্য ক্রিস গেইল। চলতি আসরে এখনও পর্যন্ত জ্বলে উঠতে পারেন তিনি। অথচ রানের পাহাড় টপকাতে তার উপর বড় ভরসা করেছিল দলটি। তবে গেইল না পারলেও অবশেষে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন আরেক ওপেনার অ্যালেক্স হেলস। এ আসরে এর আগে জ্বলে উঠতে পারেননি এ ইংলিশ ব্যাটসম্যানও।

তবে এদিন রাইলি রুশোর সঙ্গে ৬৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন হেলস। ফলে শুরুর চাপ সহজেই সামলে নেয় দলটি। এরপর হেলস আউট হলে তৃতীয় উইকেটে এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গেও দারুণ এক জুটি গড়েন দারুণ ফর্মে থাকা রুশো। ৬৭ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। তখন মনে হচ্ছিল সহজ জয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে রংপুর।

তবে ১৪তম ওভারে বল হাতে নিয়ে তাসকিন আহমেদ এ জুটি তো ভাঙেনই, দুই সেট প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানকে আউট করেন তিনি। প্রথম বলে রুশোকে ফেরানোর পর শেষ বলে ফেরান ডি ভিলিয়ার্সকে। ফলে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে সিলেট। এরপর ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান মোহাম্মদ মিঠুন ও নাহিদুল ইসলাম।

তবে দলীয় ১৭১ রানে এ দুই ব্যাটসম্যান আউট হলে আবার চাপে পড়ে যায় তারা। কিন্তু এরপর রুদ্ররূপ ধারণ করেন রেজা। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে এ ব্যাটসম্যানই শেষ ওভারে চারটি ডট বল দিয়ে ম্যাচ হারিয়েছিলেন। এদিন মাত্র ৬ বলে খেললেন ১৮ রানের ইনিংস। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রংপুরের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস খেলেন রুশো। ৩৫ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন এ ব্যাটসম্যান। এছাড়া ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। হেলস করেন ৩৩ রান। সিলেটের পক্ষে ৪২ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন

এদিন টস জিতেছিল রংপুরই। তবে বেছে নেয় ফিল্ডিং। ব্যাটিং স্বর্গে তার সুবিধা আদায় করে নিতে ভুল করেনি সিলেট। যদিও শুরুটা ভালো ছিল না। দলীয় ১৩ রানেই ফর্মে ফেরা লিটন কুমার দাসকে হারায় দলটি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৩৯ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন আরেক ওপেনার সাব্বির রহমান।

আফিফের বিদায়ের পর অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন সাব্বির। তৃতীয় উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যান যোগ করেন ৫১ রান। তবে সিলেটের বড় স্কোরের মূলে ছিল সাব্বির ও ক্যারিবিয়ান তারকা নিকোলাস পুরানের চতুর্থ উইকেট জুটি। এ জুটিতে মাত্র ৩৯ বলে আসে ৮৩ রান।  ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহই পায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৫ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন সাব্বির রহমান। ৫১ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। দারুণ ব্যাটিং করেছেন পুরানও। ২৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় করেছেন ৪৭ রান। এছাড়া আফিফ ও অধিনায়ক ওয়ার্নার ১৯ রান করে করেন। রংপুরের পক্ষে ৩১ রানের খরচায় ২টি উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৯৪/৪ (লিটন ১১, সাব্বির ৮৫, আফিফ ১৯, ওয়ার্নার ১৯, পুরান ৪৭*, জাকের ৫*; অপু ০/১৮, মাশরাফি ২/৩১, শফিউল ১/৪৩, রেজা ০/৩৫, নাহিদুল ০/১৬, গাজী ০/১৬, গেইল ০/৩৫)।

রংপুর রাইডার্স: ১৯.৩ ওভারে ১৯৫/৬ (গেইল ০, হেলস ৩৩, রুশো ৬১, ভিলিয়ার্স ৩৪, মিঠুন ১৪, নাহিদুল ১৯, মাশরাফি ৫*, রেজা ১৮*; ইরফান ১/৩৪, তাসকিন ৪/৪২, লামিচানে ০/২১, রানা ০/৫৭, কাপালী ১/৩৪)।

ফলাফল: রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago