থিসারার ঝলকে সাকিবদের হারালো কুমিল্লা
ছয় নম্বরে নেমে ১২ বলে ২৬ রানের ছোট এক ঝড়ে দলকে দেড়শো পার করিয়েছিলেন থিসারা পেরেরা। বল হাতেও দুর্বার তিনি। দারুণ বোলিং করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এক ম্যাচ পরই ফের জয়ে ফিরেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৭ রানে হারায় কুমিল্লা। আগে ব্যাটিং পেয়ে শামসুর রহমান শুভ, তামিম ইকবাল আর থিসারা পেরেরার মাঝারি ইনিংসে ১৫৩ করতে পেরেছিল মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের শিষ্যরা। ওই তাড়ায় পুরো ২০ ওভার খেলেও ঢাকা থেমেছে ১৪৬ রানে।
অথচ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে একটা সময় পর্যন্ত জেতার পথেই ছিল ঢাকা। বড় বড় সব ছক্কা মাত করে রাসেল খেলা করে দিচ্ছিলেন সহজ। কিন্তু তার আউটের পরই বদলে যায় ম্যাচের রঙ। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ঢাকার ইনিংস। এই নিয়ে আট ম্যাচে তৃতীয় হার দেখল ঢাকা। এরমধ্যে টানা দুই দিনে হারল দুই ম্যাচ। সমান ম্যাচে পাঁচটা জিতে টেবিলের তিনে এখন কুমিল্লা।
মাঝারি রান তাড়ায় শুরুতেই হজরুল্লাজ জাজাইকে হারায় ঢাকা। পাওয়ার প্লের মধ্যেই বিদায় নেন রনি তালুকদার আর সুনীল নারাইনও। ঝড়ের আভাস দিয়ে ফেরেন দরবিশ রাসুলিও।
এরপর শুরু আন্দ্রে রাসেল ঝড়। শঙ্কায় পড়ার ঢাকার ইনিংসকে সাকিবের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটিতে পথে ফেরান রাসেল। জুটিতে রাসেলেরই রান ৪৬। ২৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন ২ চার আর পাঁচখানা বিশাল ছক্কা। সেরকম ছক্কা মারার নেশাতেই কাটা পড়েন রাসেল।
পেরেরার স্লোয়ার বুঝতে না পেরে উঠিয়ে দেন ডিম উইকেটে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে। খানিক পর ফেরেন সাকিবও। আফ্রিদিন ফুলটস পেয়েও সাকিবও তুলে দেন ক্যাচ। শুভাগত হোম, নুরুল হাসান সোহানরা নাগালের মধ্যে থাকা মাঝারি ঝড় তুলে নিজেদের নজরে আনতে পারেননি। উলটো স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা মোহাম্মদ নাঈম শেখ শেষ পর্যন্ত খেলেও করেন ১৫ বলে ১৪। ১৯তম ওভার থেকে তার কাছ থেকে টান পাঁচটি ডট বল আদায় করে ম্যাচ জিতিয়ে দেন থিসারা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং পেয়েই শুরুতে তেড়েফুঁড়ে মারা শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল। আরেক প্রান্তে এনামুল হক বিজয় সুবিধা করতে পারেননি। একের পর এক ডট বল ডেকে নিয়ে আসে তার বিদায়। চাপ সরাতে আন্দ্রে রাসেলকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন বাউন্ডারি লাইনে।
এরপর থমকে যায় তামিমের রান তুলার গতিও। খানিক পর ফেরেন ইমরুল কায়েসও। চারে নামা শামসুর রহমান শুভকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে সময় নেন তামিম। তাতে দ্রুত রান আসেনি। ৪২ বলে দুজনে নেন ৫১ রান। তাতে বেশি আগ্রাসী শুভর ব্যাটই। রান বাড়ানোর তাড়াতেই শেষ হয় তামিমের ইনিংস। দলের ৭৮ রানে সাকিবকে মারতে গিয়ে রনি তালুকদারের হাতে জমা পড়েন তিনি।
একমাত্র শুভই টানতে পারছিলেন ইনিংস। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। শেষের ঝড় তুলতে হবে এমন বাস্তবতায় ৪৮ রানে থামতে হয় তাকে। তাকে থামানোর আগে সাকিব নেন আফ্রিদির উইকেটও।
শেষ দিকে থিসারা পেরারা ১২ বলে ২৬ রান করলে দেড়শো পেরুতে পারে কুমিল্লা। ওই পূঁজি নিয়ে পেরারার বোলিং ঝলকেই জিতে যায় তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫৩/৮ (তামিম ৩৪, বিজয় ১, ইমরুল ৭, শামসুর ৪৮, আফ্রিদি ১৬, থিসারা ২৬, ডসন ৬, জিয়া ৫, সাইফুদ্দিন ০* ; রাসেল ২/২৭, সাকিব ৩/২৪, নারাইন ০/৩১, রুবেল ২/২৬, মোহর ০/২৬ , শুভাগত ০/১৪)
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৪৯/৯ ( জাজাই ১, নারাইন ২০, রনি ৬, রাসুলি ১৯, সাকিব ২০, রাসেল ৪৬, শুভাগত ০, সোহান ৪, নাঈম ১৪*, রুবেল ১০, মোহর ০ ; সাইফুদ্দিন ১/৩৮, মেহেদী ০/৩১, ওয়াহাব ১/২৪, আফ্রিদি ২/১৮, ডসন ০/২০, পেরেরা ৩/১৪ )
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৭ রানে জয়ী।
Comments