বদলে যাওয়া সিলেটের কাছে পাত্তা পেল না রাজশাহী

উড়ন্ত সূচনায় সুর বেধে দিয়েছিলেন লিটন দাস। তাতে তাল মিলিয়ে ঝড় তুলেন জেসন রয়। ব্যাটে বলেই অবদান রাখেন সোহেল তানভীর। বাঁচা-মরার ম্যাচে অনেক অদল-বদল করে নামা সিলেট সিক্সার্সের কাছে পাত্তাই পায়নি রাজশাহী কিংস।
Jeson Roy
সিলেট সিক্সার্সের হয়ে নেমেই বাজিমাত জেসন রয়ের। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

উড়ন্ত সূচনায় সুর বেধে দিয়েছিলেন লিটন দাস। তাতে তাল মিলিয়ে ঝড় তুলেন জেসন রয়। ব্যাটে বলেই অবদান রাখেন সোহেল তানভীর। বাঁচা-মরার ম্যাচে অনেক অদল-বদল করে নামা সিলেট সিক্সার্সের কাছে পাত্তাই পায়নি রাজশাহী কিংস।

শুক্রবার চট্টগ্রাম পর্বে  অনেক অদল বদল করে নেমেছিল সিলেট সিক্সার্স। সোহেল তানভীরকে বাদ দিয়ে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন অলক কাপালী। একাদশেও এসেছিল তিন বদল। সবই কাজে দিয়েছে তাদের। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে সিলেটের করা ১৮০ রানের জবাবে রাজশাহী ১০৪ রানে গুটিয়ে গিয়ে হেরেছে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে।

সিলেটের বড় সংগ্রহ যেমন আসে সম্মিলিত প্রয়াসে। বল হাতেও সবাই মিলে রাজশাহীকে মুড়ে দেন তারা।

প্রায় প্রতি ম্যাচেই টপ অর্ডারে বদল আসে রাজশাহীর। দুই ম্যাচ বসিয়ে রাখার পর আগের ম্যাচে ফেরানো হয়েছিল সৌম্য সরকারকে। এদিন আবার তিনি বাদ, বাদ মার্শাল আইয়ুবও। মুমিনুল হকের সঙ্গে ফেরেন ফজলে রাব্বি।

এত অদল বদলও কাজে দেয়নি। উলটো হয়েছে হীতে বিপরীত। কাউকেই সেটেল না করে অস্থিরতায় ভোগার ফল তারা পেয়েছে তড়িৎ। বড় রান তাড়ায় ছন্দে থাকা লরি ইভান্স আউট প্রথম ওভারেই। শুরুর ঝড় তোলা তাই আর হয়নি। মুমিনুলও কাটা পড়েন দুই অঙ্কের আগে।

এর জেরে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে আসে মাত্র ৩৫ রান। সেই চাপ থেকে দলকে বের করতে আগ্রাসী ইনিংস আসেনি। বরং ফজলে রাব্বি-টেন ডসকেটের ২৯ বলে ২৯ রানের জুটি বাড়িয়েছে চাপ। সেই চাপ সরাতে অলককে মারতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন টেন ডসকেট।

এরপর জাকির হাসানের সঙ্গে ফজলে রাব্বির আরেকটি শ্লথ জুটি ম্যাচ থেকেই ছিটকে দেয় রাজশাহীকে। আস্কিং রেট যখন ১২ ছাড়িয়েছে তখন তারা গড়েন ৩২ বলে ৩৬ রানের জুটি। দুজনেই দ্রুত রান বের করতে হন ব্যর্থ।

পরিস্থিতির দাবি না মিটিয়েই ৪১ বলে পঞ্চাশ করে ফেরেন রাব্বি। এরপর টপাটপ আরও তিন উইকেট হারায় তারা। অনেক আগেই ম্যাচের ফল নিয়ে উবে যায় সব হিসেব নিকেশ।

এদিন ব্যাটিংয়ের মতো উইকেট বুঝতেও ভুল করে রাজশাহী। চট্টগ্রামের উইকেটে মরা ঘাস দেখে মেহেদী হাসান মিরাজ মনে করেছিলেন এখানে স্পিন ধরবে ভালো। টস জিতে তাই নিয়ে নেন ফিল্ডিং। এই ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়কত্ব পাওয়া অলক কাপালী আবার উইকেট পড়েছিলেন ভালোই। টস জিতলেও ব্যাটিংই নিতেন বলে জানান তিনি। আর কেন সেটা খানিক পরই তার ব্যাটসম্যানরা নেমে জানান দেন।

বিশেষ করে শুরু থেকেই আগ্রাসী শুরু করেন লিটন দাস। চার-ছয়ে মাতিয়ে তুলেন। অন্য পাশে ম্রিয়মান সাব্বির রহমান লিটনের উলটো ছবি দেখিয়ে আরাফাত সানির বলে কুপোকাত হয়ে ফেরেন এলবিডব্লিও হয়ে।

লিটন অবশ্য টানতে পারেননি। মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে তার ক্যাচ উঠে যায় টপ এজ হয়ে। লিটন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই যেন শুরু জেসন রয়ের। এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান প্রথমবার নেমে ছিলেন সাবলীল। আরাফাত সানি, মিরাজদের উড়িয়েছেন অনায়াসে। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। লঙ্কান স্পিনার সিগুকে প্রসণ্নের স্টাম্পের বল জায়গা বানিয়ে মারতে গিয়ে হয়ে যান বোল্ড। ২৮ বলের ইনিংসে ২ ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে ৪২ করে ফেরেন রয়।

চারে নামা আফিফ হোসেন নিকোলাস পুরানকে নিয়ে বাকিটা সারার কাজে ছিলেন। রান বাড়ানোর তাড়ায় ১৮ বলে ১৯ করে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন পুরান। খানিক পর ২৯ বলে ২৮ রানের দায়িত্ব থামে আফিফেরও।

শুরুতে মনে হচ্ছিল সিলেটের রান ছাড়িয়ে যেতে পারে দু’শো। মাঝের ধসেই সেটাই আবার বিপথে। এরপরও যে সিলেটের রান ১৮০ তে গেল তাতে যতনা অবদান তাদের, তারচেয়ে বেশি রাজশাহীর বোলারদের। বিশেষ করে শেষ দুই ওভারে বল করা টেন ডসকেট আর মোস্তাফিজের। এলোমেলো বল করে ওই দুই তারা দেন ১৭ রান। এরমধ্যে মোস্তাফিজই শেষ ওভারে দেন ২১ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সিক্সার্স:  ২০ ওভারে ১৮০/৬ (লিটন ২৪, সাব্বির ১, রয় ৪২  , আফিফ  , পুরান ২৭, অলক   ১৬*, নাওয়াজ ১১, তানভীর ২৩* ; কামরুল ১/৩১ , সানি ১/৩৪, মোস্তাফিজ ২/৪৩,  মিরাজ ০/২৮, প্রসণ্ন ১/১৭, টেন ডসকেট ১/১৭)

রাজশাহী কিংস: ১৮.১ ওভারে ১০৪ (ইভান্স ১, মুমিনুল ৫ , ফজলে ৪০, টেন ডসকেট  ১২, জাকির ১৬, ইয়ঙ্কার ১, প্রসন্ন ২, মিরাজ ১, সানি ৮, কামরুল ২ , মোস্তাফিজ ১*  ; তানভীর ৩/১৭, ইবাদত ০/১৮, তাসকিন ২/২০ , নাওয়াজ ৩/২২, অলক ২/১৫, আফিফ ০/৯)

ফল: সিলেট সিক্সার্স ৭৬ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago