ইয়াসিরে মুগ্ধ মুশফিক
মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন কুমার দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু হায়দার রনি, সাদমান ইসলামরা ছিলেন যুব দলের ক্যাম্পে ইয়াসির আলী রাব্বির সতীর্থ। সবাই এখন খেলছেন জাতীয় দলে। কেউবা পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু এক সময় তাদের সঙ্গে সমানভাবেই লড়তেন ইয়াসির। মাঝ পথে গেলেন পিছিয়ে। সমান তালে ফেরার লড়াইয়ে খেয়েছেন ধাক্কা।
তাও যে সে ধাক্কা নয়। দুর্ঘটনায় চার মাস কাতরাতে হয়েছে বিছানায়। একটু উনিশ বিশ হলে তো আরও বড় কিছুই হতে পারতো। কিন্তু দৃঢ় মনোবলে আবার ফিরেছেন। আর ফিরেছেন বেশ দারুণভাবেই। চলতি বিপিএলে তিনিই একমাত্র আন-ক্যাপ খেলোয়াড় যিনি কিনা দুটি পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেলেছেন। পাচ্ছেন সিনিয়র সতীর্থদের প্রশংসা।
চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলছেন ইয়াসির। তবে প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি। সিনিয়র সতীর্থ মোহাম্মদ আশরাফুলে ভরসা রেখেছিল দলটি। তবে দলের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে একাদশে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ৩৪ বলে খেলেন ৪১ রানের ইনিংস। যাতে ছিল দৃষ্টিনন্দন দুটি ছক্কা। নজর কাড়েন তখন থেকেই।
এর এক ম্যাচ পর টাইটান্সের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে করলেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা প্রথম স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে হাফসেঞ্চুরি। দুই ম্যাচ পর আগের দিন চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের রানের পাহাড় তাড়ায় খেললেন ৪৮ বলে ৭৮ রানের ঝলমলে এক ইনিংস। ৬ ম্যাচে ৩২.৫ গড়ে করেছেন ১৯৫ রান। এবার নজরটা খুব ভালোভাবেই কেড়ে নিলেন এ তরুণ।
আর এমন ইনিংসে দারুণ মুগ্ধ অধিনায়ক মুশফিক। তবে প্রত্যাশা আরও বেশি অধিনায়কের, ‘ও যেভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাটিং করছে, গাণিতিকভাবে কিছু ঝুঁকি নিচ্ছে এবং ইনিংসগুলি যেভাবে তৈরি করছে আমাদের জন্য খুবই ভাল। টি-টোয়েন্টি খেলাটাই টপঅর্ডারের। তো ওখান থেকে রান আসাটা সবসময়ই বাড়তি পাওয়া একটা টিমের জন্য। তো আশা করছি ও এটা ধারাবাহিকভাবে করবে।’
লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিজের কাজটা দেশ দারুণভাবেই করছেন ইয়াসির। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ৫ ইনিংসে সমান ২টি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরিতে করেছেন ৪১৬ রান। আর এর মাঝপথেই পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে গিয়েও খেলেছেন দারুণ। চার ইনিংসে রান ছিল দুটি ফিফটিতে করেছিলেন ১৮৭ রান।
ইয়াসিরের দল চিটাগংয়ের চিফ টেকনিক্যাল এডভাইজার মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। যিনি কিনা জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকও বটে। ডাগআউটে বসেই দেখছেন রাব্বির খেলা। তাই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ইয়াসির হয়তো পৌঁছাতে পারবেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। গন্তব্য অনেক দূর। তবে সঠিক পথেই আছেন ২২ বছর বয়সী এ তরুণ।
Comments