হতাশ মাহমুদউল্লাহর কাছেও নেই কোন ব্যাখ্যা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

‘এমন একটা মৌসুম পার করছি।’ বিড়বিড় করে সামনে থাকা এক সাংবাদিককে এমনটা বলেই সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢুকলেন খুলনা টাইটান্স অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাতেই স্পষ্ট কতটা হতাশ অধিনায়ক। আর পুরো সংবাদ সম্মেলনে তার কণ্ঠে ঝরল কেবল হতাশার গল্পই। দলের এমন পারফরম্যান্সের কোন ব্যাখ্যাই নেই অধিনায়কের কাছে।

কদিন আগে ঢাকাতে বলেছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ক্যারিয়ারে এটাই তার সবচেয়ে বাজে মৌসুম। যখন বলেছিলেন তখনও এতো হতাশ ছিলেন না। কারণ তখনও শেষ চারে ওঠার সুযোগ ছিল। হয়তো সামনেই ভালো কিছু হবে ভেবে মনে কিছুটা বিশ্বাস পুষে রেখেছিলেন। কিন্তু এদিন সিলেট সিক্সার্সের কাছে হেরে গাণিতিক হিসেবে থাকা শেষ সম্ভাবনাটাও শেষ। পুরো সংবাদ সম্মেলনে মাথাটা যে উঁচুই করতে পারলেন না অধিনায়ক।

১০ ম্যাচে মাত্র ২টি জয়। এমন বাজে সময় কখনোই কাটেনি দলটির। টানা হারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাই অধিনায়ক বললেন, ‘সেরা চারের কোন সুযোগ নেই। খুবই হতাশাজনক। বিশ্লেষণ করা কঠিন। প্রথম ৫/৬ ম্যাচের মধ্যে আমরা কয়েকটা ক্লোজ ম্যাচ জিততে পারতাম, তখন হয়তো পয়েন্ট টেবিলে ভিন্নরকম হতো। আমাদের আত্মবিশ্বাস তখন বেশি থাকতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং কোন বিভাগেই ভালো করতে পারিনি।

তবে দুঃসময় থেকে বেরিয়ে আসার কম চেষ্টা করেনি খুলনা। একাদশে পরিবর্তন এনেছেন। এনেছেন ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন। পরিবর্তন বোলিংয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হয়নি। মাহমুদউল্লাহর ভাষায়, ‘কোন বিভাগেই কোন কিছু হচ্ছে না। নিজেরা কথা বলার চেষ্টা করেছি, সমস্যা বের করার চেষ্টা করেছি। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছি। কেউই দলের জন্য নিবেদন করতে পারছে না। এটা দলের জন্য হতাশাজনক। আমি যেভাবে সাহায্য করতে পারতাম, আমিও পারিনি। ব্যক্তিগত ভাবেও হতাশ।’

এমননা যে দল নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পছন্দ মতোই দল গড়েছিল দলটি। কিন্তু কেউই মাঠে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি, ‘দল যথেষ্ট ভালো করা হয়েছিল। যদি স্থানীয় ক্রিকেটারদের কথা বলেন বেশ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নেওয়া হয়েছিল। জুনায়েদ অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলছে। শান্ত প্রমেজিং ক্রিকেটার। আরিফুল শেষ দুই বছর ধরে ভালো খেলেছে। জহুরুল অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বোলিং সাইডেও আমাদের ভ্যারাইটি ছিল। ভালো অলরাউন্ডার ছিল। আসলে কোন সাইড থেকেই আমরা দলের জন্য নিবেদন করতে পারিনি।’

গত কয়েক মৌসুম ধরেই মাঝারী শক্তির দল গড়েছিল খুলনা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ভালোই করত দলটি। এবার ব্যক্তিগতভাবেও জ্বলে উঠতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ, ‘আমি বেশ কিছু ম্যাচে শুরুটা ভালো করতে পেরেছি। কিন্তু ইনিংসগুলো বড় করতে পারিনি। রান গুলো বড় করতে পারলে দলের জন্য ভালো হতো। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স বাদই দিলাম। নিয়মিত ১৫, ১৬, ২০ , ২৫ পেয়েছি, কিন্তু বড় করতে পারেনি।  আমাদের আরও দুটি ম্যাচ আছে।  যেগুলো হয়ে গেলে সেগুলো নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। খুবই হতাশাজনক।’

‘বিশ্লেষণ করা কঠিন। সবাই খুব হতাশ ড্রেসিংরুমে। সবাই চাই ম্যাচ জিততে। আপনি যখন ম্যাচ না জিততে পারবেন… আমরা ক্রিকেট খেলি, ভালোবাসি ক্রিকেট। ক্রিকেট আমাদের রুটি-রুজি। আমি যখন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারবো না, টিমকে কিছু দিতে পারবো না… এতো বিশ্বাস নিয়ে ওরা আমাকে অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে।’ – প্রতিটা কথাই যেন অশ্রুবিন্দুর মতো ঝরল মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

12h ago