আসল ডাক্তারের নামে নকল ডাক্তার!

একজন চিকিৎসকের পরিচয় চুরি করে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলায় গত সাত বছর ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন এক ভুয়া চিকিৎসক।

একজন চিকিৎসকের পরিচয় চুরি করে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলায় গত সাত বছর ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন এক ভুয়া চিকিৎসক।

ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ঘটনাটি জনসম্মুখে চলে আসার পর শুরু হয় হইচই।

অভিযোগ উঠেছে- ডাক্তার মাসুদ করিমের পরিচয় ও তার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) নিবন্ধন নম্বর চুরি করে সেই ‘চিকিৎসক’ ২০১২ সালে উপজেলার শরৎনগর বাজারে ভাঙ্গুরা হেলথ কেয়ার লিমিটেড এর রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।

প্রকৃত চিকিৎসক ফেনীর অধিবাসী ডাক্তার মাসুদ করিমের প্রাইভেট চেম্বার রয়েছে ঢাকার খিলগাঁওয়ে। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ১৯৯০-৯১ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত সপ্তাহে তিনি এক চিকিৎসক-বন্ধুর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারেন যে এক ব্যক্তি তার বিএমডিসি নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করছেন।

সৈয়দ মেহবুব উল কাদির তার চিকিৎসক-বন্ধু মাসুদের পরিচয় ব্যবহারকারী সেই ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করেন যে উনি একজন ‘ভুয়া ডাক্তার’। কাদিরের অভিযোগ- সেই ব্যক্তি তার বন্ধুর পরিচয় ও নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করছেন। সেই ভুয়া চিকিৎসকের তৈরি করা একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টও জুড়ে দেন সেই পোস্টে।

কাদির বিষয়টি তার বন্ধু মাসুদকেও অবহিত করেন।

মাসুদ করিম গতকাল (২৬ জানুয়ারি) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমি যখন সেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি তখনই স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করি। আমি নিজেও সেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেখানে গিয়ে দেখি সেই ভুয়া ডাক্তার গা ঢাকা দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমি বুঝতেই পারছি না সেই ব্যক্তি কীভাবে আমার সনদ ও বিএমডিসি নিবন্ধন নম্বর জোগাড় করলো। আর সেসব দেখিয়ে চাকরি পেলো কীভাবে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।”

ভাঙ্গুরা হেলথ কেয়ারের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার ডেইলি স্টারকে জানান যে “মাসুদ করিম” পাঁচদিনের ছুটিতে রয়েছেন।

“ঘটনাটি জানার পর আমরা তাকে তার প্রকৃত কাগজপত্র দাখিল করতে বলি। তখন তিনি কাগজপত্র আনতে ছুটি নিয়ে বাড়ি যান। গত মঙ্গলবার থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না,” যোগ করেন আব্দুল জব্বার।

চাকরিতে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন যে তাদের কাছে সেই ‘চিকিৎসকের’ মেডিকেল সনদ, বিএমডিসি নিবন্ধন নম্বর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-এর সনদের অনুলিপি রয়েছে। “সেগুলো আসল না কী নকল- তা জানার কোনো সুযোগ আমাদের ছিলো না,” যোগ করেন হেলথ কেয়ারের পরিচালক।

পাবনা সিভিল সার্জন ডাক্তার তাহাজ্জল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে সেই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।

“নকল মাসুদের” প্রকৃত পরিচয় এখনো জানা যায়নি। যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago