সেই রনি এবার একাদশেই জায়গা পাচ্ছেন না
অভিষেকেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা জিতে চমক দেখিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তৃতীয় আসরে সেবার দলটির অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন অনেক অখ্যাত খেলোয়াড়রা। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন তরুণ আবু হায়দার রনি। সে ধারায় পড়ে জাতীয় দলেও জায়গা করে নেন। অথচ চলতি আসরে সেই কুমিল্লায় ফিরে একাদশেই জায়গা মিলছে না তার।
বলা হয় বিপিএলের আবিষ্কারই রনি। সেবার ১২ ম্যাচে পেয়েছেন ২১ উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা প্রয়োজনীয় সময়ে এনে দিয়েছিলেন কার্যকরী উইকেট। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে লেন্ডন সিমন্সের উইকেটের কথা এখনও চোখে ভাসে ক্রিকেটপ্রেমীদের। দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেছিলেন তাকে। ফলশ্রুতিতে উপুর হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন ওই ক্যারিবিয়ান। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রশংসায় মুখর ছিল প্রায় সকল ক্রিকেটবোদ্ধারাই।
যদিও পরের আসরে বরিশাল বুলসের হয়ে খেলে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেননি রনি। ৭ ম্যাচে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। তবে ২০১৬ সালে ঢাকা ডায়নামাইটসে ফিরে আবার জ্বলে ওঠেন। সেবারও দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১৩ ম্যাচে পান ১৫ উইকেট। চলতি আসরেও তাকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশাই ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। কিন্তু এবার একাদশেই সুযোগ মিলছে না এ তরুণের।
শুরুতে অবশ্য চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলেছিল তার। সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ২ ওভার বল করান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। তাতে উইকেট না পেলেও মাত্র ১০ রান দিয়েছিলেন। পরের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষেও একই অবস্থা। কোটা পূরণ হয়নি তার। তবে দারুণ বোলিং করেছেন রনি। ৩ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে পেয়েছেন প্রতিপক্ষের একমাত্র উইকেটটি। যেটা ছিল ক্রিস গেইলের।
তবে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে পরের ম্যাচটি ভালো যায়নি রনির। ২.৫ ওভার বল করে ৩৭ রান খরচ করেছিলেন তিনি। কিন্তু পেয়েছেন ২টি উইকেট। এরপর চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ ওভার বল করে ৩০ রানের খরচায় থেকেছেন উইকেটশূন্য। এরপর আর জায়গা মিলছে না এ পেসারের।
মূলত টিম কম্বিনেশনের কারণেই দল থেকে বাদ পড়ছেন রনি। পঞ্চম ম্যাচের আগে পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ যোগ দেন দলে। যোগ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কান পেস অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরাই। তাদের অন্তর্ভুক্তিতেই বাদ বাদ পড়েন রনি। কারণ একাদশে তৃতীয় পেসার হিসেবে খেলছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ব্যাটিং ক্ষমতার কারণেই রনিকে পেছনে ফেলেছেন তিনি।
শুধু রনিই নন, বিপিএলে প্রায় বেশিরভাগ ম্যাচেই ত্যাগ করতে হচ্ছে স্থানীয় খেলোয়াড়দেরই। কম্বিনেশনের কারণে বসে থাকতে হচ্ছে অনেক খেলোয়াড়কেই। কুমিল্লাতেই সুযোগ মিলছে না মোহাম্মদ শহীদ ও মোশারফ হোসেন রুবেলের মতো পরীক্ষিত খেলোয়াড়দের। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হওয়া সত্ত্বেও আট নয় নম্বরে ব্যাট করছেন মেহেদী হাসান। চিটাগং ভাইকিংসে বসিয়ে রেখেছে মোহাম্মদ আশরাফুলের মতো খেলোয়াড়কে।
আর টিম কম্বিনেশনে যে স্থানীয়দেরই ত্যাগটা করতে হচ্ছে তা আগের দিনই বলেছেন মোহাম্মদ মিঠুন, ‘আসলে এটা হচ্ছে দলের চাহিদা। গতবার দলের প্রয়োজনে উপরে খেলেছিলাম। দলের প্রয়োজনেই নিচে খেলতে হচ্ছে। আমাদের চার বিদেশি চারজনই টপঅর্ডার তাদেরকে নিচে নামানো যাচ্ছে না। তো এটা দলীয় পরিকল্পনার জন্যই এই জায়গাটা।’
Comments