লুইসের সেঞ্চুরিতে খুলনাকে গুঁড়িয়ে শীর্ষে কুমিল্লা

বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করে এভিন লুইসের ঠিক করে দিয়েছিলেন ম্যাচের গতিপথ। সেই গতিপথ ফেরাতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো খুলনা টাইটান্সকে। কিছুটা জারিজুরি করলেও সে পথের কাছাকাছিও যেতে পারেনি তারা। আরও এক হতাশার আর পুরো ম্যাচে বল কুড়িয়ে কান্তিই হয়েছে তাদের বড় সঙ্গী।
Evin Lewis
সেঞ্চুরির পথে লুইসের শট। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করে এভিন লুইসের ঠিক করে দিয়েছিলেন ম্যাচের গতিপথ। সেই গতিপথ ফেরাতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো খুলনা টাইটান্সকে। কিছুটা জারিজুরি করলেও সে পথের কাছাকাছিও যেতে পারেনি তারা। আরও এক হতাশার আর পুরো ম্যাচে বল কুড়িয়ে কান্তিই হয়েছে তাদের বড় সঙ্গী।

টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়া নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় তেমন কিছু পাওয়ার ছিল না খুলনা টাইটান্সের। ছিল না হারানোরও। সোমবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নির্ভার হয়ে নেমেও অবশ্য লাভ হয়নি মাহমুদউল্লাহর দলের। আগে ব্যাট পাওয়া কুমিল্লা লুইসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে পায় ২৩৭ রানের পাহাড়। যা বিপিএলের ইতিহাসেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ওই পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে খুলনা তাদের দৌড় থামায়  ১৫৭ রানে। ম্যাচ হারে  ৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে। এই জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চিটাগং ভাইকিংসকে হটিয়ে আপাতত শীর্ষে উঠে গেছে কুমিল্লা।

খুলনার ভুলের শুরু অবশ্য একদম টসেই। চট্টগ্রামের অমন পাটা পিচেও মাহমুদউল্লাহকে দেখে গেছে ফিল্ডিং বেছে নিতে। এরপর যা হলো তা বড়ই বিব্রতকর তাদের জন্য। বোলাররা ছিলেন এলোমেলো, ফিল্ডাররা গা ছাড়া। এরমধ্যে পেশিতে টান পেয়েও দুর্বার ছিলেন লুইস। তাকে থামানো যায়নি, সইতে হয়েছে ইমরুল কায়েস, শামসুর রহমানদের পিটুনিও।

এদিন খুলনা তাদের প্রায় সব বোলারকেই  ওয়াইড ইয়র্কার করতে নির্দেশনা দিয়েছিল বোধহয়। কারণ তারা এমনটা করতে গিয়ে দিলেন ২১টি ওয়াইড। অর্থাৎ একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাড়ে তিন ওভার কেবল ওয়াইডের কারণেই অতিরিক্ত করতে হয়েছে তাদের।

এরমধ্যে স্লটে বল ছিল অহরহ। চোট কাটিয়ে ফেরা এভিন লুইসের তাই তাণ্ডব চালাতে কোন অসুবিধাই হয়নি। শুরুতে মন্থর খেলতে থাকা তামিম ইকবাল ফেরার পর পরই আউট হন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু ইমরুল নেমে সব ভুলিয়ে দেওয়ার মত ব্যাট চালাতে থাকেন। দারুণ সব চার হয়ে রানরেট আকাশে তোলার পর ২১ বলে ৩৯ করে এলবিডব্লিও হয়ে ইমরুল ফিরলেও সেই ঝড়ে ছেদ পড়েনি।

সময়ের সঙ্গে ডানা মেলতে থাকা লুইস গুনে গুনে মেরেছেন ১০ ছক্কা। সেঞ্চুরি পেরিয়েছেন ৪৭ বলে।  প্রথম ১০ ওভারে ৭৭ করা কুমিল্লা পরের ১০ ওভারে করে ১৬০ রান! তার বেশিরভাগ কৃতিত্ব লুইসের। তিনি আর আর আউট হননি। অপরাজি থেকেছেন ১০৯ রানে। শেষ দিকে নেমে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দলকে চূড়ায় তুলেন শামসুর।

এক ইনিংস শেষ হতেই ম্যাচের ভাগ্য আসলে অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল।  সে ভাগ্য ফেরানোর কোন ইঙ্গিতই দিতে পারেনি খুলনা। রান তাড়ায় নেমে ব্র্যান্ডন টেইলর, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট যা অল্প বিস্তর বিনোদন দিয়েছেন। কুমিল্লার কপালে ভাঁজ তৈরি করতে পারেননি, নিজেদের তৃপ্তি পাওয়ার মতও কিছু হয়নি তাদের। উল্টো শেষ তিন উইকেট নিয়ে হ্যাট্রটিক করে বসেন ওয়াহাব রিয়াজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ২০ ওভারে ২৩৭/৫  (তামিম ২৫, লুইস ১০৯*, এনামুল ০, ইমরুল ৩৯, পেরেরা ১১, আফ্রিদি ১, শামসুর ২৮ ; শরিফুল ১/৫৩, সাদ্দাম ০/৫৯, ভিসে ০/৪৯, মাহমুদউল্লাহ ২/৩২, ব্র্যাথওয়েট ২/৪২)

খুলনা টাইটান্স:   ১৮.৫ ওভারে ১৫৭ (টেইলর ৫০,  জুনায়েদ ২৭, মালান ১৩, মাহমুদউল্লাহ ১১, ব্র্যাথওয়েট ২২, শান্ত ১৪, ভিসে ৮, আরিফুল ২, তাইজুল ১ , শরিফুল, সাদ্দাম ০ ; সাইফুদ্দিন ১/৩৯, মেহেদী ০/২৮ , শহীদ ০/২৪, ওয়াহাব ৩/১৪ , আফ্রিদি ৩/২৭, পেরেরা ১/২৮)

ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮০ রানে জয়ী।

Comments