একটি এবিডি ভিলিয়ার্স ‘শো’

এবিডি ভিলিয়ার্স যখন ক্রিজে আসেন পর পর দুই বলে দুই উইকেট খুইয়ে দল তখন চাপে। এসেই ছক্কায় উড়ালেন সেই চাপ। তারপর থেকেই তার ব্যাটে আলোর বিচ্ছুরণ। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে তাগড়া হয়ে থাকা আলেক্স হেলসও যোগ দিলেন সেই উৎসবে। আর যায় কোথায়। এই দুই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস।
AB de Villiers
সেঞ্চুরির পথে ভিলিয়ার্সের শট। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এবিডি ভিলিয়ার্স যখন ক্রিজে আসেন পর পর দুই বলে দুই উইকেট খুইয়ে দল তখন চাপে। এসেই ছক্কায় উড়ালেন সেই চাপ। তারপর থেকেই তার ব্যাটে আলোর বিচ্ছুরণ। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে তাগড়া হয়ে থাকা আলেক্স হেলসও যোগ দিলেন সেই উৎসবে। আর যায় কোথায়। এই দুই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস।

ঢাকা ডায়নামাইটসের দেওয়া ১৮৭ রানের লক্ষ্য রংপুর রাইডার্স তুড়ি মেরেই যেন উড়িয়ে দিল। ম্যাচ জিতল ১০ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে। দলকে জিতিয়ে ৫০ বলে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকলেন ভিলিয়ার্স,  সঙ্গী হেলস অপরাজিত থেকেছেন  ৫৩ বলে ৮৫ রানে। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবার রাতে হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে পুরো আলোই কেড়ে নেন এই দুজন। 

এই জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেও উঠে গেল মাশরাফি মর্তুজার দল। অন্যদিকে টানা তিন হারে কিছুটা যেন শঙ্কায় ঢাকা।

চট্টগ্রামের পিচে ১৮৭ রান নেওয়ার মতই স্কোর। তবে চ্যালেঞ্জ তো ছিলই। সে চ্যালেঞ্জে জিততে শুরুটা হওয়া চাই আগ্রাসী। কিন্তু রংপুরের হলো উলটো। টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা জারি রেখে আন্দ্রে রাসেলের বলে ক্রিস গেইল ফেরেন ১ রানেই। ঠিক পরের বলে গোল্ডেন ডাকের শিকার দুরন্ত ফর্মে থাকা রাইলি রুশো।

হ্যাটট্রিক সম্ভাবনার বলে এসেই ছক্কা মেরে শুরু ভিলিয়ার্সের। এরপর যেন রানের খই ফুটেছে ব্যাটে। সাকিব, রাসেল, নারাইন কাউকেই রেহাই দেননি। আগের ম্যাচের তাণ্ডবের ফর্ম ধরে রাখেন হেলসও।

তৃতীয় উইকেটে এই দুজন সব হিসেব নিকেশ করেন দেন সাদামাটা। অবিচ্ছিন্ন ১৮৪ রানের জুটিতে ম্যাচই শেষ করে দিয়ে আসেন তারা। ভিলিয়ার্স, হেলসের সামনে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে ঢাকার বোলিং। নিজেদের মুন্সিয়ানা দেখানোর দিনে বিন্দুমাত্র উত্তাপ, সংশয় রাখেননি খেলার ফলে।

যে কারণে ভিলিয়ার্স হয়ে আছেন বিশেষ। এদিন মিলল তার ছাপ। পেসারদের বলে বিদ্যুৎ গতিতে ঘুরিয়ে পাঠালেন সীমানার ওপারে, স্পিনারদের জায়গা বের করে যেমন খুশি মারলেন যেন তেমন। ৫০ বলের ইনিংসে ৮ চারের সঙ্গে তার ব্যাট থেকে এলো হাফ ডজন ছক্কা। ভিলিয়ার্সের দাপটে কিছুটা হেলস কিছুটা চাপা পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার ব্যাটেও বইল চার-ছয়ের বন্যা। আট চারের সঙ্গে মেরেছেন তিনখানা ছক্কা। 

ঢাকা আরও ২০ রান বেশি করলে যেন সুবিধেই হতো হেলসের। সেঞ্চুরি পেতে পারতেন তিনিও। 

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে জুতসই শুরু পায়নি ঢাকা। তাদের দুই ওপেনারকে শুরুতেই চেপে ধরেন অফ স্পিনার নাহিদুল আর মাশরাফি। সেই চাপ সরাতে মাশরাফির বলে ক্যাচও দিয়েছিলেন হজরতুল্লাহ জাজাই, শফিউল তা নিতে না পারায় সাফল্য আসতে দেরি হয়।

তবে পাওয়ার প্লের মধ্যেই ওপেনিং জুটি ভাঙে রংপুর। বল করতে এসে নিজের প্রথম বলেই জাজাইকে ফেরান ফরহাদ রেজা। পরের উইকেটেও অবদান তার। বোলার নাজমুল ইসলাম অপু হলেও সুনীল নারিনের ক্যাচটা দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় হাতে জমান রেজা।

পরে ঝড় তুলা সাকিবকে বোল্ড করেও দলকে এনে দেন স্বস্তি। এরমধ্যে ওয়ানডাউনে নেমে রনি তালুকদার পেয়ে যান ছন্দ। তিনি ৩২ বলে ৫২ করে ফেরার পরও পোলার্ডও পিটিয়েছিলেন শেষে। তবু ঢাকা দু’শোর কাছে যেতে না পারার আফসোস করতে করতেই ফিল্ডিংয়ে নামে। ভিলিয়ার্স, হেলস পরে দেখিয়েছেন কতটা ঘাটতি আসলে রয়ে গিয়েছিল ঢাকার ব্যাটিংয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভার ১৮৬/৬  (জাজাই ১৭, নারাইন ২৮, রনি ৫২,  সাকিব ২৫, রাসেল ১৪, পোলার্ড ৩৭* , শুভাগত ১, নুরুল ৩* ; নাহিদুল ০/২২, মাশরাফি ১/৩০, রেজা ২/৩২ , নাজমুল ১/৩৫, শফিউল ১/৩৫, শহীদুল ১/২৬)

রংপুর রাইডার্স:  ১৮.২ ওভারে ১৮৯/২  (গেইল ১, হেলস ৮৫* , রুশো ০, ভিলিয়ার্স ১০০* ;  শাহাদাত ০/১৬ ,  রাসেল ২/৩০ , সাকিব ০/৪১, নারাইন ০/৪৫, রুবেল ০/৪২, অনিক ০/১৪ )

ফল: রংপুর রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago