ইভান্স-ডেসকাটের ঝড়ে টিকে রইল রাজশাহী, সিলেটের বিদায়

নিকোলাস পুরানের ঝড়ে জেতার মত রানই করেছিল সিলেট সিক্সার্স। শেষ চারে উঠার হাতছানিতে বল হাতেও শুরুটা ভালো ছিল তাদের। কিন্তু মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে লরি ইভান্স আর রায়ান টেন ডসকেট সব নিয়ে যান নিজেদের পক্ষে। দারুণ এক জয়ে সিলেটকে বিদায় করে শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখেন রাজশাহীর।
Laurie Evans
ঝড় তুলে রাজশাহীকে জেতালেন ইভান্স। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নিকোলাস পুরানের ঝড়ে জেতার মত রানই করেছিল সিলেট সিক্সার্স। শেষ চারে উঠার হাতছানিতে বল হাতেও শুরুটা ভালো ছিল তাদের। কিন্তু মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে লরি ইভান্স আর রায়ান টেন ডসকেট সব নিয়ে যান নিজেদের পক্ষে। দারুণ এক জয় সিলেটকে বিদায় করে শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখেন রাজশাহীর।

বুধবার রাতে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৮৯ রান করেছিল সিলেট। ইভান্স-ডেসকেট তান্ডবে সেই রান ১২ বল আগেই পেরিয়ে ৫ উইকেটে জিতেছে রাজশাহী।

এই জয়ে সব ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে ঢাকার সঙ্গে আছে রাজশাহী। যদিও নিজেদের হাতে কিছু নেই, তাদের কামনা করতে হবে ঢাকার দুই হার। অন্যদিকে ১১ ম্যাচের সাতটা হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে অলক কাপালীর দলের।

অথচ রান তাড়ার শুরুটা একদম জুতসই ছিল না রাজশাহী। এদিনও ব্যাটিং অর্ডারে রদ বদল করে নামে মেহদী হাসান মিরাজের দল। ওপেনিং থেকে সৌম্য সরকারকে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়, তিনি খেলেছেন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। একাদশে ফিরে ওপেনে নেমে ব্যর্থ হন জাকির হাসান। ওয়ানডাউনে অভিজ্ঞতার দাম রাখতে পারেননি শাহরিয়ার নাফীস। আক্রমণে এসেই তাকে ফেরান সিক্সার্স কাপ্তান অলক। ক্যারিবিয়ান জনসন চার্লসই পেটাচ্ছিলেন। তিনিও অলকের শিকার। তবে তার উইকেটের বড় অবদান সাব্বিরের। বাউন্ডারি লাইনে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তিনি।

দ্রুত দুই উইকেট তুলে তেতে উঠছিল সিলেট। তাদের তেজে পানি ঢেলে দেন ইভান্স, ডসকেট। তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেনদের আলগা বোলিংয়ের ফায়দা তুলে ঝড় তুলেন তারা। পিটিয়েছেন অলক, নেওয়াজের স্পিনেও। তাদের ঠেকানোর মতো কোন পথ খুঁজে পায়নি সিলেট। 

এই দুজনের ব্যাটে এক পর্যায়ে ওভারপ্রতি ১০ এর উপর চলে যাওয়া সমীকরণ চলে আসে পাঁচের নিচে। ৪৫ বলে গড়ে তুলেন ১০৯ রানের বিস্ফোরক জুটি। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ১৮ বলে ৪২ করে যখন ডেসকাট আউট হন তখন ম্যাচ একদম রাজশাহীর মুঠোয়। ৩৬ বলে ৭৬ করে তার পথ ধরে ইভান্সও ফেরেন খানিক পর। তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেছে সিলেটের।

আগের ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংস হেরে গেলে সিলেটের সমীকরণ হতো সহজ, শেষ চারে যাওয়ার হিসেব থাকত নিজেদের হাতে। ভাইকিংস জিতে যাওয়ায় সমীকরণ একটু যদি কিন্তুর উপর পড়ে যায় তাদের। তবে সুযোগ যেহেতু আছে বারুদ নিয়েই নেমেছিল তারা।

চট্টগ্রামের পাটা উইকেটে টস জিতে শুরু থেকেই আগ্রাসন চালানোর পথ বেছে নেয় তারা। নেমেই তেড়েফুঁড়ে মারতে থাকেন লিটন দাস। আরাফাত সানির প্রথম ওভারে একটি করে ছক্কা-চার মারার পরও তার তর সয়নি, আরেকটি মারতে গিয়ে এলবিডব্লিও হয়ে ফেরত যান। আরেক ওপেনার আফিফ হোসেন ভড়কে না গিয়ে সেখান থেকেই তাল মিলিয়ে পিটিয়েছেন। জেসন রয়েরও অ্যাপ্রোচ ছিল একই। মোস্তাফিজকে ছক্কা মারার পরের বলে কাটারে পরাস্ত হয়ে শেষ হয় তার ইনিংস।

তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ে উঠে আফিফ-সাব্বিরের। দলকে ৮৮ রানে গিয়ে থামেন আফিফ। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে শূন্য রানেই আউট ছিলেন সাব্বির রহমান। উইকেটরক্ষক জনসন চার্লস সাব্বিরের ব্যাটে লাগা বল হাতে জমালেও কোন আবেদন করেননি, টের পাননি রাব্বিও। বেঁচে যাওয়া সাব্বির এরপর কিছুটা সময় নেন, পরে পিটিয়েছেন বেশ। ছক্কা-চারে নিজের দাপট জারি রেখে এগুচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। সেই রাব্বিই ছেঁটেছেন তাকে, রাব্বিকে ছক্কা পেটাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন।

এরপরই তুমুল ঝড় তুলেন নিকোলাস পুরান। রাজশাহী বোলারদের ছারখার করে চার-ছক্কায় মাতিয়ে তুলেন গ্যালারি। মাত্র ২১ বলে ফিফটি তুলে আর আউট হননি। ৩১ বলে তার ৭৬ রানের তাণ্ডবেই মূলত ১৯০ ছুঁইছুঁই রানে পৌঁছায় সিলেট। বিধ্বংসী ইনিংসে পুরান হাফ ডজন করে ছক্কা-চার মেরেছেন।

কে ভেবেছিল পুরানের এমনও ঝড়ো ম্যাচ জেতাতে পারবে না সিলেটকে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সিক্সার্স:   ২০ ওভারে ১৮৯/৫ ( লিটন ১০, আফিফ ২৯, রয় ১৩, সাব্বির ৪৫, পুরান ৭৬*, নেওয়াজ ০, অলল ১০* ; সানি ১/৪৮, মিরাজ ১/৩২, কামরুল ২/৩২, মোস্তাফিজ ১/৩১, সৌম্য ০/৪৭

রাজশাহী কিংস:  ১৮ ওভারে ১৯০/৫  (চার্লস ৩৯  , জাকির ৭, নাফীস  ৯,  ইভান্স ৭৬, টেন ডসকেট ৪২ ,ইয়ঙ্কার, সৌম্য ২*  ; তানভীর ১/২৬  , তাসকিন ১/৩৪ , ইবাদত ০/৩১, নেওয়াজ ০/৪৩, অলক ২/৪১)

ফল: রাজশাহী কিংস ৫ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Prof Muhammad Yunus for a road map to reforms and the next general election.

6h ago