‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’

বুদ্ধদেবের স্লোগানই হাতিয়ার ব্রিগেডের বাম সমাবেশে

বামফ্রন্টের রাজনৈতিক সমাবেশ আর মাত্র দুদিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি। মমতার ডাকে ভারতের বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো যে মাঠে সমাবেশ হয়েছিলো, কলকাতার সেই ঐতিহাসিক ব্রিগেড ময়দানের বামদের ডাকা মহাসমাবেশ করবেন বাম নেতৃত্ব।
Buddhadeb Bhattacharya
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফাইল ছবি। ছবি: সংগৃহীত

বামফ্রন্টের রাজনৈতিক সমাবেশ আর মাত্র দুদিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি। মমতার ডাকে ভারতের বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো যে মাঠে সমাবেশ হয়েছিলো, কলকাতার সেই ঐতিহাসিক ব্রিগেড ময়দানের বামদের ডাকা মহাসমাবেশ করবেন বাম নেতৃত্ব।

এই সমাবেশে বামফ্রন্টের মূল বক্তা হিসেবে এবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আনার চেষ্টা করছেন বাম নেতৃত্বে।

যদিও তার শারীরিক অবস্থার কারণে শেষ পর্যন্ত আদৌ সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছাতে পারবেন কী না সেটি এখনও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

তবে বামফ্রন্টের ডজন ডজন নেতৃত্বের মধ্যে রাজ্যের বামকর্মী, সমর্থক এবং ভোটে ব্যাংকের কাছে এখনও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যই যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে, সেটা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বামফ্রন্টের একজন শীর্ষ নেতার কথা থেকেই পরিষ্কার হচ্ছে।

ওই বাম নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন, “দেখুন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না একজন সফল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শিল্প এবং কৃষি দুটোকে সামনে রেখে রাজ্যের উন্নয়নের সলতে পাকিয়েছিলেন সিপিআইয়ের ওই পলিটব্যুরোর সদস্য। ব্রিগেডে তার মুখ থেকে বামকর্মীরা অনেক কিছু শুনতে চাইবেন, তাকে দেখতে চাইবেন; খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার এটা। ওই নেতার ভাষায়, এমন কী বাম শীর্ষ নেতারাও চাইছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্রিগেডর সমাবেশে মুল বক্তা হোন।”

কিন্তু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। চোখে দেখতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। তীব্র শ্বাসকষ্টও রয়েছে সঙ্গে। চিকিৎসকদের পরামর্শ একদম আলোয় বের হবেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ফলত ব্রিগেডে বামফ্রন্টের সমাবেশে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রায় অনিশ্চিত। যদিও তার লিখিত ভাষণ পাঠ করে শোনানো হতে পারে কর্মী-সভ্যদের সামনে।

তবুও বামফ্রন্টের নেতারা শেষ মুহূর্তে তার কয়েক মিনিটের জন্য সভায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, “দলীয়ভাবে তাকে আনার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। আমরা চাই বুদ্ধবাবু ব্রিগেডের সমাবেশে থাকুন।”

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০০ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ২০০১ সালে ৬ অক্টোবর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ফিরে এবং তিনি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরপর দুই দফায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বুদ্ধদেব। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠন করলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে।

তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কার্যত রাজনৈতিকভাবে অদৃশ্য হয়ে পড়েন বুদ্ধদেব। যদিও বেশ কিছু রাজনৈতিক সমাবেশে দেখা গিয়েছিলো তাকে। সর্বশেষ ব্রিগেডের সমাবেশে দেখা গিয়েছিলো চার বছর আগে। তখন তিনি বিজেপিবিরোধী ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’। তার সেই রাজনৈতিক ডাক ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে বামদের অন্যতম বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস লুফে নিয়েছে। কিন্তু, বামেরা সেই অর্থে বুদ্ধদেবের সেই ডাককে রাজনৈতিকভাবে প্রচারে আনতে পারেনি আজও।

যদিও শেষ মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচনের আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই স্লোগানকেই সামনে রেখে লোকসভায় বিজেপিবিরোধী কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের বাম ব্রিগেড।

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

11h ago