কুমিল্লাকে হারিয়ে শীর্ষে মাশরাফির রংপুর
চিটাগং ভাইকিংস ও ঢাকা ডায়নামাইটসের হারে আগের দিনই প্রথম কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত হয়ে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। রানরেট বিবেচনায় অনেকটা নিশ্চিত ছিল রংপুর রাইডার্সও। আর এদিন এ দুই দলের মোকাবেলাটা ছিল কোয়ালিফায়ারের আগে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার ম্যাচ। পাশাপাশি শীর্ষস্থান নিশ্চিত করারও। আর তাতে কুমিল্লাকে উড়িয়ে দিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। ৯ উইকেটের বড় জয়ে কোয়ালিফায়ারের দারুণ প্রস্তুতি তো সেরে শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে দলটি।
অনিয়মিত বোলার নাহিদুল ইসলামের হাতেই ইনিংসের প্রথম ওভারটা তুলে দিয়েছিলেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেই নাহিদুলের ঘূর্ণিতেই খালি হাতে শেষ তামিম ইকবাল। পরের ওভারে পেলেন এনামুল হক বিজয়কে। আরেক অনিয়মিত বোলার রবি বোপারাও পেলেন ৩টি উইকেট। আর মাঝে তোপ দাগালেন মাশরাফি। তাতে ৭২ রানের সাদামাটা স্কোর পায় কুমিল্লা। আর সে লক্ষ্য পার করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি চ্যাম্পিয়নদের। ৬৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দলটি।
অথচ টসটা জিতেছিল কুমিল্লাই। কিন্তু বেছে নিয়েছিলেন ব্যাটিং। আর অধিনায়কের সিদ্ধান্তের ভুল প্রমাণ করতেই হয়তো শুরু থেকেই সাজঘরে আসা যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন দলের ব্যাটসম্যানরা। ২৩ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের পাঁচ উইকেট। তখন সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বিপিএলের পরিসংখ্যান ঘাটতে। বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডই না ভেঙে ফেলে দলটি।
তবে অবস্থা ততোটা খারাপ হয়নি কুমিল্লার। ষষ্ঠ উইকেটে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন লিয়াম ডসন। গড়েন ৩৩ রানের জুটি। তাতেই মানরক্ষা হয় দলটির। তবে দুর্ভাগ্য প্রায় ছুঁয়ে যাচ্ছিল দলটিকে। ফরহাদ রেজার একটি বাউন্সার জিয়ার গায়ে লেগে মাটিতে পড়ে স্টাম্পেও লেগেছিল। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে বেল না পড়ায় বেঁচে গিয়েছিলেন জিয়া।
সৌভাগ্য অবশ্য খুব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি জিয়া। বোপারার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে রাইলি রুশোর দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরমুখী হয়েছেন তিনি। এরপর আর কেউ দায়িত্ব নিতে না পারলে ১৬.৩ ওভারে ৭২ রানেই গুটিয়ে যায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২১ রান করেছেন জিয়া। এছাড়া ডসন ১৮ ও শামসুর রহমান ১২ রান করেছেন। এ তিন জন ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। রংপুরের পক্ষে ৩ ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন বোপারা। এছাড়া নাহিদুল ও মাশরাফি ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৯ রানেই ছন্দের খোঁজে থাকা মেহেদী মারুফকে হারায় রংপুর। তবে তাতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি দলকে। প্রোটিয়া তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্সকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিস গেইল। এ দুই ব্যাটসম্যানের অবিচ্ছিন্ন ৬৭ রানের জুটিতে ৬৩ বল হাতে রেখেই জয় পায় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
তবে রংপুরের জন্য আশার খবর এদিন রান পেয়েছেন গেইল। ৩০ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। নিজের ইনিংসে মেরেছেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। এছাড়া ২২ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ভিলিয়ার্স। কুমিল্লার পক্ষে একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন সঞ্জিত সাহা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৬.৩ ওভারে ৭২ (তামিম ০, বিজয় ৫, শামসুর ১২, ইমরুল ০, ডসন ১৮, পেরেরা ৩, জিয়া ২১, রনি ০, ওয়াহাব ০, সঞ্জিত ২, ওয়াকার ৬*; নাহিদুল ২/৯, মাশরাফি ২/১৮, শহিদুল ১/১২, আফ্রিদি ১/৮, বোপারা ৩/৭, রেজা ০/১৭)।
রংপুর রাইডার্স: ৯.৩ ওভারে ৭৬ (গেইল ৩৫*, মারুফ ৫, ভিলিয়ার্স ৩৪*; রনি ০/১১, সঞ্জিত ১/৩২, ওয়াকার ০/৩৩)।
ফলাফল: রংপুর রাইডার্স ৯ উইকেটে জয়ী।
Comments