‘দমনপীড়নে’ বাড়ছে সৌদি শরণার্থীর সংখ্যা

Rahaf Mohammed al-Qunun
কানাডায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে কথা বলছেন সৌদি শরণার্থী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন। ছবি: সংগৃতীত

গৃহযুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের লোকজন পালিয়ে উন্নত দেশে চলে যাচ্ছেন- এমন খবর সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিয়তই দেখা যায়। কিন্তু, তুলনামূলক বিবেচনায় রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব থেকেও লোক পালানোর খবর আসছে গণমাধ্যমে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায় বিরুদ্ধমত ও স্বাধীনতাহরণের কারণে সৌদি আরব থেকে দেশ ছাড়ার মানুষের সংখ্যা প্রতি বছর বেড়েই চলছে।

আল জাজিরার এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর হিসাবে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সৌদি শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘দমনপীড়নের’ মুখে দেশটির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে উন্নত দেশের দিকে পা বাড়াচ্ছেন সৌদি আরবের নাগরিকরা।

প্রতিবেদনটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ইউএনএইচসিআর-এর এক হিসাবে দেখা যায় ২০১৫ সালে সৌদি আরবের রাজনীতিতে যুবরাজ সালমানের আবির্ভাবের পর ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি তথা ২ হাজার ৩৯২ সৌদি নাগরিক বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

তাদের মধ্যে ১,১৪৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে, ৪৫৩ জন কানাডায়, ১৯১ জন অস্ট্রেলিয়ায়, ১৮৪ জন যুক্তরাজ্যে এবং ১৪৭ জন জার্মানিতে। এছাড়াও, ২৭৪ জন বিভিন্ন দেশে আশ্রয় প্রার্থী হয়েছেন।

দেশ ছাড়াকে একটি ‘জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় গ্রহণকারী একজন সৌদি শরণার্থী। নিরাপত্তার কারণে তিনি নিজের নাম ‘নওরাহ’ বলে জানিয়েছেন সিএনএন’কে।

অথচ ১৯৯৩ সালে যখন সৌদি নাগরিকদের অন্য দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার ঘটনা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা প্রথম রেকর্ড করে তখন এর সংখ্যা ছিলো মাত্র সাতজন। তারা তখন আশ্রয় নিয়েছিলেন জর্ডান, গ্রিস এবং সুইডেনে।

এরপর থেকে সৌদি শরণার্থীদের সংখ্যা একটু একটু করে বাড়তে শুরু করলেও ২০১১ সালে ‘আরব বসন্তের’ ধাক্কায় বেড়ে যায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা। তখন তাদের সংখ্যা ছিলো দেড় হাজারের কাছাকাছি। তবে সেই সব শরণার্থীদের বেশিরভাগ ছিলেন দেশটির পূর্বাঞ্চল প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন।

কিন্তু, যুবরাজের ‘দমননীতির’ ফলে সারাদেশ থেকে শরণার্থীদের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে চলছে বলে জানানো হয় ইউএনএইচআর এর পক্ষ থেকে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষক অ্যাডাম কুগলি সিএনএন’কে বলেন, “মোহাম্মদ বিন সালমানের রাজনৈতিক দমননীতির কারণে লোকজন দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। আমি মনে করি, শরণার্থীদের সংখ্যার দিকে তাকালে বিষয়টি অনুধাবন করা যায়।”

তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিএনএন’র কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
government action against rising crime

Nationwide combing operation launched to curb rising crime: home adviser

The adviser announced the decision after a meeting on law and order following a series of alarming incidents

1h ago