সাক্ষাৎকারের জন্য গ্রেপ্তারকে ‘পেশাগত দক্ষতা’ হিসেবে স্বীকৃতিতে টিআইবির উদ্বেগ

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং কথিত ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণামূলক’ সাক্ষাৎকারের জন্য গ্রেপ্তারকে ‘পেশাগত দক্ষতা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদক পাওয়ায় আমরা বিচলিত বোধ করছি।
TIB

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং ভয়ভীতি, পক্ষপাত ও স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সেই সঙ্গে কোন অবস্থাতেই যেন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিতর্কিত না হয় সেব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী এই সংস্থাটি। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আজ এক বিবৃতিতে টিআইবি এই আহ্বান জানায়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যেকোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পুলিশ বাহিনী সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দেবে, জনগণের জানমাল রক্ষায় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কখনই বিতর্কিত ভূমিকা নেবে না এমনটাই প্রত্যাশিত। অথচ নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন,  কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং কথিত ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণামূলক’ সাক্ষাৎকারের জন্য গ্রেপ্তারকে ‘পেশাগত দক্ষতা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদক পাওয়ায় আমরা বিচলিত বোধ করছি। কারণ এসব ঘটনার প্রতিটির ক্ষেত্রেই পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তা’, ‘পক্ষপাতিত্ব’ বা ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগ সর্বজনবিদিত।”

পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো ধরনের দলীয় প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ড. জামান বলেন, “পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরে শুদ্ধাচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চর্চা সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও আইনের সমান সুযোগ লাভের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। তাই শান্তি ও জনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ আইন লঙ্ঘনকারীকে বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের যেসব অভিযোগ উঠেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই বাহিনীর প্রতি জনগণের নির্ভরশীলতা প্রতিষ্ঠায় এই মুহূর্তে এটাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।”

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, পুলিশ সপ্তাহ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি একগুচ্ছ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে যার অধিকাংশই যৌক্তিক এবং ইতিবাচক বিবেচনার যোগ্য। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীতে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিশেষ করে ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য। আমরা উৎসাহিত হয়েছি যে, পুলিশ সপ্তাহ ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘নিরীহ কেউ যেন হয়রানি নির্যাতনের শিকার না হন’ তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার যে, দোষী, নির্দোষ,সন্দেহভাজন, অভিযুক্ত বা নিরীহ সবার আইনি সুরক্ষা পাওয়া সংবিধানে স্বীকৃত অধিকার; এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনের আওতায় থেকে দায়িত্ব পালন করবে এটা নিশ্চিতভাবেই আইনগত বাধ্যবাধকতা, যা ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আমাদের আশান্বিত করেছে,একইসাথে আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে, বিনাবিচারে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আর কাউকে নিহত হতে হবে না।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago