৭ বছরের সেই মেসি ভক্ত এখন তালেবানদের টার্গেট

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের কথা। হঠাৎ করেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল একটি শিশুর ছবি। যার পরনে ছিল আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সির মতো প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে তৈরি জামা। আর সেই জামার পিছনে লেখা লিওনেল মেসির নাম ও তার জার্সি নম্বর। সে ছবি দেখে বিস্মিত হয়ে যান স্বয়ং মেসিও।
ছবি: এএফপি

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের কথা। হঠাৎ করেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল একটি শিশুর ছবি। যার পরনে ছিল আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সির মতো প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে তৈরি জামা। আর সেই জামার পিছনে লেখা লিওনেল মেসির নাম ও তার জার্সি নম্বর। সে ছবি দেখে বিস্মিত হয়ে যান স্বয়ং মেসিও।

পরে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা তাকে কাতারে নিয়ে যায়। দেখা হয় তার স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে। ছবি তোলেন এমনকি মেসির সাক্ষর করা দুটি জার্সিও মিলে। তখন থেকেই আলোচিত আফগানিস্তানের সাত বছরের শিশু মুর্তজা আহমেদি। অথচ সেই ঘটনাই আজ তার জীবন দুঃসহ করে তুলেছে। মাঝে মাঝেই ভাবেন এমন কিছু যদি না ঘটত।

নিষ্পাপ শিশুটি এখন তালেবানদের টার্গেট। গজনি প্রদেশের জাঘোরিতে রীতিমতো উম্মাদের মতো খোঁজা হচ্ছে তাকে। আর তাও করা হচ্ছে তুচ্ছ কারণেই। তাদের ধারণা মুর্তজাকে অনেক টাকা দিয়েছেন মেসি। এখন সে টাকা তাদের চাই। এছাড়াও কাতারে দেখা করতে যাওয়াও পছন্দ হয়নি তালেবানদের।

মার্কিন সংবাদসংস্থা সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুর্তজার মা শফিকা বলেন, ‘যখন থেকে আমার ছেলে বিখ্যাত হয়েছে তখন থেকেই আমাদের পরিবারে নানা সমস্যা লেগে আছে। শুধু তালেবানরা নয় আরও কিছু গোত্র আছে যাদের ধারণা মেসি তাকে অনেক টাকা দিয়েছে। আমরা তার স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সবসময় হুমকির মধ্যে আছি।’

এ কারণে মুর্তজার বাবা পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেন। এবং পার্শ্ববর্তী শহর বাম্যানে স্থানান্তরিত হন। কিন্তু এরপর থেকে তিনিও ফিরতে পারছেন না বাড়িতে। শিশু মুর্তজা কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলেছেন, ‘আমি যখন ফিরে আসি ওইবার শেষবার আমি আমার বাবাকে দেখেছি। এরপর সে চলে যায়। আমি তাকে আর দেখেনি। আমি তাকে অনেক মিস করি। যখন সে মাকে কল করে আমি কথা বলি।’

এছাড়াও কান্না জর্জরিত কণ্ঠে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির কিছু বর্ণনাও দেন মুর্তজা, ‘তালেবানরা আমার আত্মীয়-স্বজনদের হত্যা করেছে। তারা গাড়ি থামিয়ে যাত্রী হত্যা করে এবং ঘরে খোঁজ করেও মানুষ হত্যা করে। আমাদের এখানে ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ করেছে তালেবানরা। এমনকি ঘর থেকেও বের হতে পারি না। মেশিন গান, রকেট, বোমার শব্দ শুনে অভ্যস্ত। মানুষের চিৎকারও শুনি।’

বাম্যান থেকে পড়ে মুর্তজা ও তার মা রাজধানী কাবুলে চলে যান। এবং সেখানে বিভিন্ন স্থানে উদ্বাস্তু হয়ে বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে মুর্তজার মার ভয় কাটছে না। টাকার জন্য তার ছেলেকে অপহরণ করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। দুঃখ নিয়েই তাই বললেন, ‘এটাই ভালো হতো যদি সে না আলোচিত হতো।’

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago