চলে গেলেন আল মাহমুদ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ গতকাল দিবাগত রাত ১১টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকাকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ বোধ করায় প্রবীণ কবি আল মাহমুদকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
১৯৫০ সালের দিকে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে লেখক হিসেবে আবির্ভূত হন। ‘লোক লোকান্তর’ ও ‘সোনালী কাবিন’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি হাজারো মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেন।
তিনি ছিলেন একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক।
তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার শহরমুখী প্রবণতার মধ্যেই ভাটি বাংলার জনজীবন, গ্রামীণ আবহ, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবনপ্রবাহ এবং নরনারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহকে কবিতায় অবলম্বন করেন।
১৯৬৮ সালে ‘লোক লোকান্তর’ ও ‘কালের কলস’ নামে দুইটি অসাধারণ কাব্যগ্রন্থের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন আল মাহমুদ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কলকাতায় চলে যান। যুদ্ধের পর ফিরে এসে তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর ‘গণকণ্ঠ’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সেই সময় সরকারবিরোধী লেখনীর অপরাধে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়।
কারামুক্তির পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে ডেকে শিল্পকলা একাডেমির প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ওই বিভাগের পরিচালক হিসেবে অবসর নেন।
তার অন্যান্য জনপ্রিয় রচনাবলী হচ্ছে- মায়াবী পর্দা দুলে উঠো, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া, পানকৌড়ির রক্ত, নদীর ভেতরের নদী এবং কবির আত্মবিশ্বাস।
কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি একুশে পদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
Comments