মেসির পেনাল্টি গোলে রক্ষা বার্সেলোনার

ছবি: এএফপি

প্রথমার্ধের খেলাটা ম্যাড়মেড়ে ভাবেই শেষ হচ্ছিল। তখনই বিতর্কিত এক পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এরপরই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। ব্যবধান বাড়াতে মুহুর্মুহু আক্রমণ করে কাতালানরা। কিন্তু স্ট্রাইকাররা যেন গোল করতেই ভুলে গেলেন। এমনকি স্বয়ং লিওনেল মেসিও। অর্ধ ডজনবার তো গোলরক্ষককে একাই পেলেন। পেলেন আবার পেনাল্টিও। কিন্তু জালের ঠিকানা যেন ভুলেই গেল দলটি।

বার্সেলোনার ফরোয়ার্ডরা হয়তো এদিন গোল করা ভুলে গিয়েছিলেন। তার জন্য হয়তো কিছুটা দায় রিয়াল ভায়াদলিদ গোলরক্ষক জর্দি মাসিপকে দিতে পারেন তারা। একের পর এক দুর্দান্ত সেভ করে গেছেন তিনি। ঠেকিয়েছেন মেসির করা একটি পেনাল্টিও। নিশ্চিত গোলই বাঁচিয়েছেন কমপক্ষে পাঁচটি। তাতে অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথমার্ধের সেই পেনাল্টি গোলেই হার দেখতে হয় তাদের। ১-০ গোলের স্বস্তির জয়ে মাঠ ছাড়ে মেসির দল।

তবে জয়ের স্বস্তিটাও কম নয় বার্সেলোনার জন্য। কারণ এর আগের তিনটি ম্যাচে টানা ড্র করেছে দলটি। এদিন জয়ের ধারায় ফিরেছে। তবে দুশ্চিন্তা থেকেই গেল দলটির। খালি বারেও গোল দিতে না পারা নিঃসন্দেহে ভালভার্দের কপালের ভাঁজ চওড়া করেছে।

ন্যু ক্যাম্পে এদিন ম্যাচের শেষ দিকে যে গতি আর উত্তেজনা বিরাজ করেছে, প্রথমার্ধে তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। উল্টো পাল্টা আক্রমণে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল ভায়াদলিদ। ৪১তম মিনিটে প্রায় গোল পেয়েই যাচ্ছিল দলটি। যদি নাচো মার্টিনেজ ক্রসটা ঠিক মতো দিতে পারতেন। তবে এর আগের মিনিটেই দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন মেসি। প্রথমে তার শট ডিফেন্ডার প্রতিহত করলে ফিরতি বলে আবার শট নিলে দারুণ দক্ষতায় তা ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক মসিপ।

৪৩তম মিনিটে মেসির সফল স্পট কিকে এগিয়ে স্বাগতিকরা। চলতি আসরে লা লিগায় ২২তম গোল করলেন অধিনায়ক। ডিবক্সের মধ্যে জেরার্দ পিকেকে মিডফিল্ডার মিচেল ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। অবশ্য পিকেকে হালকাভাবেই ছুঁয়েছিলেন মিচেল। তবে ফুটবল আইনে তাও বিধিসম্মত না হওয়ায় ভিএআরে টিকে যায় সে সিদ্ধান্ত।

দ্বিতীয়ার্ধে তুমুল জমে ওঠে খেলা। প্রথম ১০ মিনিটেই কমপক্ষে তিনটি গোল পেতে পারতো বার্সেলোনা। ৪৮তম মিনিটে মেসির দুর্দান্ত ভলি অবিশ্বাস্য দক্ষতায় রুখে দেন গোলরক্ষক। চার মিনিট পর ডিবক্সের মাঝ থেকে মেসির নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর দুই মিনিট পর কি করলেন কেভিন-প্রিন্স বোয়াটেং।  গোলরক্ষককে একা পেলেন। সময়ও পেলেন। কিন্তু শটটাই নিতে পারলেন না।

৬৫তম মিনিটে বোয়াটেংয়ের পথেই হাঁটেন তার বদলি নামা লুইস সুয়ারেজ। মেসির পাসে গোলরক্ষককে একেবারে একা পেলেন। সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষকের গায়ে মেরে সহজ সে সুযোগ মিস করেন এ উরুগুইয়ান। ফিরতি বলে অবশ্য বল পেয়েছিলেন মেসি। তার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন গোলরক্ষক মাসিপ। দুই মিনিট পর মেজাজ হারিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন মেসি। তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণভাবে ডিবক্সের ঢুকে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে এক ডিফেন্ডার ফেলে দিলে ফাউলের আবেদন করেন এ আর্জেন্টাইন। কিন্তু সে আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। উল্টো হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন তাকে।

৭১তম মিনিটে মেসির ক্রস ছোট ডি বক্সের মধ্যে একেবারে ফাঁকায় বল পেলেন সুয়ারেজ। প্রয়োজন ছিল শুধু আলতো একটা টোকার। কিন্তু ঠিকভাবে বল ধরতেই পারলেন না এ স্ট্রাইকার। পরের মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে মেসির নেওয়া কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৭৭তম মিনিটে মেসির পাস থেকে দারুণ এক দূরপাল্লার শট নিয়েছিলেন সের্জিও রোবার্তো। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৮৪তম আবার পেনাল্টি পায় বার্সা। এবার ডি-বক্সের মধ্যে বদলি খেলোয়াড় ফিলিপ কৌতিনহোকে ফাউল করেন কিকো। তবে তা থেকে গোল আদায় করে নিতে পারেনি দলটি। মেসির শট ঠেকিয়ে দেন মাসিপ। ফিরতি বলে হেড নিলেও তা দারুণ দক্ষতায় লুফে নেন গোলরক্ষক। এ নিয়ে টানা চারটি স্পটকিক বারপোস্টের ডান দিকে মারেন মেসি। আগের তিনটিতে সাফল্য পেলেও এবার ব্যর্থ।

৮৮ মিনিটে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। এবারও প্রায় বার ঘেঁষেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সে শট। ম্যাচের যোগ করা সময়েও দুটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। শেষ মুহূর্তে মেসির পাসে গোলরক্ষককে আরও একবার একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি সুয়ারেজ। ফলে নুন্যতম ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্সেলোনাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Protests continue as Ishraque vows to stay on streets until advisers resign

Protests rolled into this morning as BNP activists and leaders held their ground in front of the mosque, demanding that Ishraque be allowed to take the oath as mayor

2h ago