এক পরিবারের ৫ জন নিখোঁজ, স্বজনরা বলছেন ‘আত্মগোপনে’

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক পোশাক কারখানার কর্মকর্তার স্ত্রী, দুই মেয়েসহ একই পরিবারের পাঁচ জন সাত দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে পুলিশ ও নিখোঁজ নারীর স্বামীর ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।
narayanganj map

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক পোশাক কারখানার কর্মকর্তার স্ত্রী, দুই মেয়েসহ একই পরিবারের পাঁচ জন সাত দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে পুলিশ ও নিখোঁজ নারীর স্বামীর ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।

ঘটনার পর সাত দিন পেরিয়ে গেলেও আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোন সন্ধান পায়নি পুলিশ। এ ঘটনায় পোশাক কারখানার কর্মকর্তা জামাল সর্দার ১৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

জামাল সর্দার বরিশালের উজিরপুরের সানুহার এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্ডেনিয়া নামের একটি পোশাক কারখানায় প্রোডাকশন ম্যানেজার। আর নিখোঁজ নিপা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাঞ্চনপুর এলাকার মৃত আব্দুর রউফের মেয়ে।

জামাল সর্দার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের নুরবাগ এলাকার একটি বাড়িতে স্ত্রী নিপা বেগম (৩০), মেয়ে আশামনি (১১) ও প্রিয়া মনি (৫), তাঁর ভায়রার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৪) ও শ্যালকের ছেলে আজিমকে (৭) নিয়ে ভাড়া থাকেন। প্রতি সপ্তাহের মতো তিনি গত বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কর্মস্থল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী কন্যাদের কাছে আসেন। শনিবার ৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে কর্মস্থলে চলে যান।

কর্মস্থলে যাওয়ার সময় স্ত্রীর হাতে বেতনের ৭০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি। রোববার রাত পৌনে ১০টা থেকে স্ত্রী নিপা বেগমের মোবাইল ফোন বন্ধ পান জামাল। সোমবার সকালে জামাল তার ছোট ভাই খলিলকে ফোন করে পাঠান বাসায়। খলিল বাসায় গিয়ে দেখেন বাসার দরজায় তালা ঝুলানো। এ খবর পেয়ে জামাল বাসায় ফিরে আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ নিয়ে তাদের কোন সন্ধান পাননি। পুরো সময় ধরে স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তিনি। এরপরই থানায় জিডি করেন।

জামাল আরও বলেন, জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য বেতনের ৭০ হাজার টাকার সঙ্গে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রাখা ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলায় দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে রাগ করে বাসা ছেড়ে তিনি আত্মগোপনে গেছেন। তাছাড়া বাসায় তার ও মেয়েদের পোশাক, পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার কিছুই নেই।

নিখোঁজ নিপা বেগমের মা সখিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চার দিন আগে নিপা ফোন দিয়ে জানায় আশামনি, সুমাইয়া ও আজিমকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছে। সে ছোট মেয়ে প্রিয়া মনিকে নিয়ে আছে। মাদ্রাসার নাম, সে কোথায় আছে, কেন এমন করেছে কিছুই জানায়নি। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।    

তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নিপার মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করে সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেখা গেছে। তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খোঁজ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত শনাক্ত করতে পারব।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন শাহ পারভেজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গত কিছুদিন ধরে ভাল যাচ্ছিল না। যে কারণে ধারণা করছি ওই গৃহবধূ আত্মগোপনে রয়েছে। এছাড়াও তার মা বলেছে যোগাযোগ করেছে কিন্তু কোথায় আছে জানেন না। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

4h ago