কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গপথের খননকাজ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম সড়ক সুড়ঙ্গপথ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের’ খননকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে পতেঙ্গায় নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে সুড়ঙ্গপথ খননকাজের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ৩ দশমিক ৫ কি.মি. দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গপথটি বাংলাদেশসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এটিই প্রথম। চার-লেন বিশিষ্ট এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। চীনের পূর্ব এবং পশ্চিম সাংহাইকে সংযুক্তকারী টানেলের আদলে এটি চট্টগ্রামের দুটি প্রান্তকে যুক্ত করবে।
প্রস্তাবিত এই সুড়ঙ্গপথের মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৯ হাজার ০৯২ কি.মি.। যার ৩ দশমিক ৪০ কি.মি. থাকবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এবং এর এপ্রোচ রোড হবে ৪ দশমিক ৮৯ কি.মি.। যার সঙ্গে ৭৪০ মিটার লম্বা সেতু চট্টগ্রাম শহরকে কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম পাশের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
এই সুড়ঙ্গপথের এক পাশে থাকবে নেভি কলেজ এবং অপরপ্রান্তে থাকবে কোরিয়ার রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (কেইপিজেড) এবং কর্ণফুলী সার কোম্পানি (কাফকো)। এটি চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনবে। এছাড়াও, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাধ্যমে চট্টগ্রামে প্রবেশ মুখের যানবাহনের চাপ কমাবে।
এই একাধিক লেন সমৃদ্ধ সুড়ঙ্গপথটি চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করবে এবং চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে যাতায়াতকে সহজতর করবে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত দুটি সেতুরও যানজট নিরসন করবে।
সূত্র জানায়, চীনের নির্মাণ কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)-কে এই সুড়ঙ্গপথটি নির্মাণের পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সফররত চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একত্রে এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এদিন বন্দর নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৭ কি.মি. দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেন।
লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স বেনকিং জেবিকে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
Comments