ফরহাদ রেজার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ফাইনালে দোলেশ্বর
বল হাতে শুরুতে রুদ্ররূপ ধারণ করলেন ফরহাদ রেজা। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় যখন দ্রুত রান করার প্রয়োজন ছিল, তখন নেতৃত্ব দিলেন তিনিই। ঝড় তুলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছেই মাঠ ছাড়েন এ অলরাউন্ডার। রেজার ব্যাট বলের দারুণ নৈপুণ্যেই ফাইনালের টিকেট কাটে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। এই রেজার অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই সেমিফাইনালের টিকেট পেয়েছিল তারা। এদিন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারায় দলটি।
লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ সূচনা পায় দোলেশ্বর। মোহাম্মদ আরাফাতের সঙ্গে ৫১ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন সাইফ হাসান। এরপর অবশ্য দ্রুত ২টি উইকেট হারিয়ে চাপে পরে দলটি। তৃতীয় উইকেটে মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে ৭৬ রানের আরও একটি জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেন সাইফ। তবে তুলনামূলক ধীর গতিতে রান তোলায় শেষদিকে আবার চাপে পরে দলটি।
দলীয় ১২৮ রানে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হন সাইফ। এরপর মার্শালের সঙ্গে উইকেটে যোগ দেন দারুণ ছন্দে থাকা ফরহাদ রেজা। শেষ তিন ওভারে দোলেশ্বরের প্রয়োজন ছিল ৪৩ রানের। উইকেটে নেমেই ঝড়ো গতিতে ব্যাট করতে থাকেন রেজা। তার সঙ্গে মার্শালও আক্রমণে যোগ দেন। আল-আমিন হোসেনের করা ১৮তম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান নেন রেজা। কাপালীর করা পরের ওভারে আসে ১৬ রান।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রানের। প্রথম বলেই দারুণ এক চার মারেন সৈকত। ফলে কাজটা সহজ হয়ে যায় দোলেশ্বরের জন্য। বাকিটা সিঙ্গেলসের উপর ভর করেই ২ বল বাকী থাকতে জয় নিশ্চিত করেন সৈকত ও রেজা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস খেলেন সাইফ। ৪৯ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৩১ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রান করেন মার্শাল। মাত্র ৮ বলে ২৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রেজা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ফরহাদ রেজার বোলিং তোপে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে প্রাইম ব্যাংক। দলীয় ৭১ রানেই প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে দলটি। গড়ে ওঠেনি বলার মতো কোনো জুটি। তবে এক প্রান্ত ধরে রেখে ব্যাট করতে থাকেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকির হাসান। ষষ্ঠ উইকেটে অলোক কাপালীকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তিনি। গড়েন ৬৫ রানের জুটি।
দলীয় ১৩৬ রানে জাকির আউট হওয়ার পর এক প্রান্ত ধরে খেলতে থাকেন কাপালী। মূলত এ দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় প্রাইম ব্যাংক। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ পায় দলটি।
১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলেছেন কাপালী। ৩১ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে সাজান এ অলরাউন্ডার। ৩৯ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫২ রান করেন জাকির। এ দুই ব্যাটসম্যান ছাড়া কেবল অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় (১২) দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন।
এদিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ফরহাদ রেজা। ৩২ রানের খরচায় একাই ৫টি উইকেট নিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। এছাড়া এনামুল হক জুনিয়র ২টি উইকেট পেয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ২০ ওভারে ১৭০/৯ (বিজয় ১২, রুবেল ৯, জাকির ৫২, আল-আমিন ৬, আরিফুল ৩, মিলন ৯, কাপালী ৫৫, মনির ৯, মোহর ০, রাজ্জাক ৭*, আল-আমিন ১*; সানি ১/১৯, আরাফাত ১/২৫, মানিক ০/৩৮, রেজা ৫/৩২, সৈকত ০/৩২, এনামুল ২/২২)।
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব: (সাইফ ৬১, আরাফাত ১৯, ফরহাদ ১, মার্শাল ৪৬, রেজা ২৪*, সৈকত ৮*; মোহর ০/৩০, মনির ১/৩৪, আল-আমিন ০/৪০, রাজ্জাক ১/১৯, কাপালী ১/৪১)।
ফলাফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ফরহাদ রেজা।
Comments