মেসির জোড়া গোলে রেকর্ড গড়েই শেষ আটে বার্সা
দুটি গোল করলেন। করালেন দুটি। করতে পারতেন কমপক্ষে আরও দুটি। যদি না প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার-গোলরক্ষকরা অতিমানবীয় পারফর্ম না করতেন। এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই অনন্য ছিলেন লিওনেল মেসি। আর তাতে অলিম্পিক লিঁওকে উড়িয়ে দিয়েছে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। ফরাসী ক্লাবটির বিপক্ষে ৫-১ গোলের ব্যবধানের জয় তুলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
শেষ আটের পথে এদিন বায়ার্ন মিউনিখের রেকর্ড ভেঙেছে বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে টানা ৩০ ম্যাচ হার দেখেনি দলটি। এর মধ্যে ২৭টি জয় ও ৩টি ড্র। ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০২ সালে এপ্রিল পর্যন্ত টানা ২৯টি ম্যাচ ঘরের মাঠে অপরাজিত ছিল জার্মানির ক্লাব বায়ার্ন। ১৭ বছর পর তাদের রেকর্ডটি ভেঙে নিজেদের করে নিলস্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৩ সালের আগস্ট থেকে ন্যু ক্যাম্পে অপরাজিত রয়েছে তারা।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে মেসির বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক অ্যান্থনি লোপেজ। ১৭তম মিনিটে মেসির সফল স্পটকিকে এগিয়ে যায় বার্সা। ডি-বক্সের মধ্যে লুইস সুয়ারেজকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। দারুণ এক পানেনকা শটে লক্ষ্যভেদ করে বার্সা অধিনায়ক।
৩১ মিনিটেই ব্যবধান বাড়ায় বার্সেলোনা। আর্থুর মেলোর বুদ্ধিদীপ্ত এক ক্রস দারুণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষ এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলমুখে যান সুয়ারেজ। গোলরক্ষক এগিয়ে এলে আড়াআড়ি পাস দেন কৌতিনহোকে। ফাঁকা বাড়ে আলতো টোকায় বল জালে পাঠাতে কোন ভুল করেননি এ ব্রাজিলিয়ান। ৪০তম মিনিটে বুসকেতসের বাড়ানো বলে লিঁওর বদলী গোলরক্ষক ম্যাথু গোরগেলিনকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু তার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন গোরগেলিন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোল পেতে পারতেন মেসি। আর্থুরের পাস থেকে আলতো চিপে গোলরক্ষককে পরাস্তও করেছিলেন। বলও প্রায় জাল ছুঁয়ে ফেলেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফের্নান্দো মার্কাল। ৫৮তম মিনিটে ম্যাচে ফিরে আসে লিঁও। কর্নার থেকে সৃষ্ট জটলায় বল ঠিকভাবে পরিষ্কার করতে পারেননি বার্সেলোনার ডিফেন্ডাররা। সের্জিও বুসকেতসের হেড থেকে বল পেয়ে যান লুকা তুজা। বুক দিয়ে নামিয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ফরাসি এই মিডফিল্ডার।
৭৮তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে আবার ব্যবধান বাড়ান মেসি। বুসকেতসের পাস ডি-বক্সে দুই ডিফেন্ডারকে দুই দফা কাটিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। অবশ্য ঝাঁপিয়ে পড়ে বল হাত লাগিয়েছিলেন গোলরক্ষক গোরগেলিন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ায় বার্সা। মাঝমাঠ থেকে পাওয়া বল নিয়ে এগিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ প্রান্তে নিখুঁত ক্রস দেন মেসি। আর সে ক্রসে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জেরার্দ পিকে।
৮৬তম মিনিটেও সেই মেসির ঝলক। এবারও প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পাস দেন বদলী খেলোয়াড় উসমান দেম্বেলেকে। দেম্বেলের শট গোলরক্ষকের গায়ে লেগে জালে প্রবেশ করলে পঞ্চম গোল পায় বার্সেলোনা। ফলে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
দিনের অপর ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখকে তাদেরই মাঠে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল।
Comments