ইয়াসিরের সেঞ্চুরির পরও আবাহনীর কাছে হারল ব্রাদার্স
একাই যে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের ইয়াসির আলী। সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন। কিন্তু আগ্রাসী হতে পারেননি। পাননি সতীর্থদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্যও। ফলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ঝড়ো ফিফটিই হয়ে যায় ম্যাচের নির্ধারক। ফলে ১৪ রানের স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী।
নিউজিল্যান্ড থেকে ওয়ানডে সিরিজ খেলে দেশে ফিরে বিশ্রামে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এদিন ফিরলেন তিনি। তবে নেতৃত্ব থাকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের কাছেই। তবে ফিরেই দারুণ খেলেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন। বল হাতেও প্রয়োজনীয় সময়ে এনে দিয়েছেন কার্যকরী ব্রেক থ্রু।
তবে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং লক্ষ্যটা সাধ্যের মধ্যেই রাখতে পেরেছিল ব্রাদার্স। ২৩৬ রানে আবাহনীকে আটকে দিয়েছিল তারা। কিন্তু সে লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় দলটি। ৩২ রানেই নেই প্রথম সারির তিন উইকেট। এরপর উইকেটে নামেন ইয়াসির আলী। এক প্রান্ত আগলে ব্যাট করতে থাকেন তিনি।
সতীর্থদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে লক্ষ্যে এগিয়ে চলছিলেন ইয়াসির। চতুর্থ উইকেটে চেরাগ জানির সঙ্গে ৩০, পঞ্চম উইকেটে ফজলে মাহমুদের সঙ্গে ৪০, ষষ্ঠ উইকেটে শরিফুল্লাহর সঙ্গে ৩৭, সপ্তম উইকেটে মোহাম্মদ শরিফের সঙ্গে ৩৭ এবং অষ্টম উইকেটে নাঈম ইসলামের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু তারপরও লক্ষ্য থেকে ১৪ রান দূরেই থামতে হয় ব্রাদার্সকে।
সেঞ্চুরি করলেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি বলেই হারতে হয়েছে ব্রাদার্সকে। শেষ দিকেও আগ্রাসী ব্যাট করতে পারেননি কোন ব্যাটসম্যানই। তবে লিস্ট এ ক্রিকেটের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইয়াসির। ১১২ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১০৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন শরিফুল্লাহ।
আবাহনীর পক্ষে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি ও সাব্বির রহমান।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল ব্রাদার্স। পেসার মেহেদী হাসানের বোলিং তোপে সিদ্ধান্তের যথার্থতাও মিলে। দলীয় ৫৬ রানেই নেই আবাহনীর ৩ উইকেট। এরপর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের প্রতিরোধ। শুরুতে পান নাজমুল হোসেন শান্তকে। এরপর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। শান্তর সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩৯ রান ও সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। তবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি।
অবশ্য সে ঘাটতি কিছুটা হলেও মাশরাফিকে নিয়ে পুষিয়ে দেন সাইফউদ্দিন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৪৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন। মাত্র ১৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ২৬ রান করেন মাশরাফি। তাতেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান করে আবাহনী। ৯৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ২৩৬/৬ (জহুরুল ১৪, জাহিদ ১, জাফর ৮, শান্ত ৪৪, মোসাদ্দেক ৫৪, সাব্বির ১৩, সাইফউদ্দিন ৫৯*, মাশরাফি ২৬*; শরীফ ০/৫৮, মেহেদী ২/৫৮, জানি ১/২৮, নাঈম ২/২৮, শরিফুল্লাহ ১/৩০, শাখাওয়াত ০/৩১)।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২২২/৮ (মিজানুর ৭, জুনায়েদ ১৭, হামিদুল ০, জানি ১৫, ইয়াসির ১০৬, ফজলে ১৩, শরিফুল্লাহ ২১, শরীফ ১৭, নাঈম ১০, মেহেদী ১*; রুবেল ০/২৬, মাশরাফি ২/৩৯, সাইফউদ্দিন ১/৫৪, মোসাদ্দেক ০/২৮, সানজামুল ১/২৬, আরিফুল ০/২৭, সাব্বির ২/২১)।
ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ১৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (আবাহনী লিমিটেড)।
Comments