নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে: মাহবুব তালুকদার

Mahbub Talukder
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ছবি: স্টার

চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, এই নির্বাচনে জৌলুস নেই। একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররাও কেউ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এহেন নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আজ (১৮ মার্চ) সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক বিবৃতে এই কথা বলেছেন তিনি।

ভোটারদের নির্বাচনবিমুখী এই অবস্থানকে “গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত” উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, “আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? ইংরেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইলেকটেড না বলে সিলেকটেড বলা যেতে পারে কী?”

“এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে অসীন হয়েছেন। পরবর্তীতে আরও ৫০ জন সম্ভবত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অসীন হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে অসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়” মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। আইনে থাকলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয়ভাবে। এই নির্বাচনের স্বরূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়?”

“কিছুদিন পূর্বে একজন মাননীয় সংসদ সদস্য—যিনি সদ্য প্রাক্তন একজন মন্ত্রীও বটে সংসদে বলেছেন, “নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তার ভাষ্যমতে প্রশ্ন থেকে যায়, এই নির্বাচন মর্যাদা হারালো কবে?  জাতীয় নির্বাচনের সময়? না উপজেলা নির্বাচনের সময়? এ জন্য কে বা কারা দায়ী তা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি। তবে তার এই বোধোদয় নিশ্চয়ই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি হতে পারে না।”

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কী পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে সেটা বর্তমানে সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে, সকল দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত হলে ভোটারদের উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।”

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

35m ago