বসন্ত উৎসবে রঙিন বিশ্বকবির স্বপ্নভূমি শান্তিনিকেতন

দোল উৎসবে রঙিন গোটা পশ্চিমবঙ্গ। বিশেষ করে কবিগুরুর প্রতিষ্ঠান শান্তিনিকেতনের ছবিটা যেন আরও একটু বেশি রঙিন মনে হবে। কেননা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আজকের এই দোল উৎসবে কবির স্মৃতি বিজড়িত এই বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের আবির খেলায় অংশ নেওয়ার দৃশ্য রাজ্যের আর কোথাও নেই।
Holly
পশ্চিমবঙ্গের দোল উৎসব। ছবি: স্টার

দোল উৎসবে রঙিন গোটা পশ্চিমবঙ্গ। বিশেষ করে কবিগুরুর প্রতিষ্ঠান শান্তিনিকেতনের ছবিটা যেন আরও একটু বেশি রঙিন মনে হবে। কেননা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আজকের এই দোল উৎসবে কবির স্মৃতি বিজড়িত এই বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের আবির খেলায় অংশ নেওয়ার দৃশ্য রাজ্যের আর কোথাও নেই।

শান্তিনিকেতন ছাড়া এদিন রাজ্যটির রাজধানী কলকাতা, নদীয়ার মায়াপুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং হাওড়ার বেশ কিছু এলাকায় দোল উৎসব নিয়ে দেখা গিয়েছে ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রার আয়োজন।

কবিগুরুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এদিন সকাল থেকেই রঙিন আবিরের সঙ্গে নাচ ও গানের তালে উৎসবের চেহারা নিয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে বেজে ওঠে চেনা গান-‌ “ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল” অথবা একেবারে শেষ মুহূর্ত “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো”।

বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ কখন রঙের খেলা চালু করেছিলেন, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কিন্তু শান্তিনিকেতনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ যে বসন্তোৎসব চালু করেছিলেন, তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই আজও। বরং যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল ১৯২৫ সালে। সেই উৎসব প্রতি বছরই আরও রঙিন হচ্ছে, বলা ভালো এই বসন্ত উৎসবের মুখ আরও রঙিন হচ্ছে।

Holly
ছবি: স্টার

প্রথা অনুযায়ী সেই সময় থেকে দেশি-‌বিদেশি অতিথির পাশাপাশি উৎসবে সামিল করা হতো আদিবাসীদেরও। সেই প্রথা আজও চলেছে।  শান্তিনিকেতন উৎসবের, আনন্দের পরিচিত মুখ হলেও পৌষ উৎসব পেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই শান্তিনিকেতন অপেক্ষায় থাকে, কখন আসবে বসন্ত উৎসব। কখন আসবে ফাল্গুনের সেই পূর্ণিমা।

শান্তিনিকেতনের ছাত্র অন্বেষা দত্ত জানালেন কীভাবে তাদের আজকের আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বলেন, সকাল থেকেই শান্তিনিকেতনের রাস্তা রাঙ্গা হয়ে ওঠে আবিরে। বিশ্বভারতী চত্বর মূলত আজকের বসন্ত অনুষ্ঠানের ভেন্যু। সেখানে নৃত্যনাট্যের পাশাপাশি চলবে সারাদিন নানা উৎসব। আশ্রমের ছাত্র‌-ছাত্রীরা তো থাকেনই। তাছাড়াও থাকেন ভিনদেশি ছাত্র‌-ছাত্রীরাও।

তিনি আরও জানান, তাদের সঙ্গে নেচে ওঠে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা এদিন বসন্ত উৎসব উদযাপন করছেন।

Holly
ছবি: স্টার

কৃষ্ণকুমার দাস কলকাতার একজন সাংবাদিক। প্রতিবছরই তিনি কন্যা, ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে পৌঁছান শান্তিনিকেতনে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বললেন, এই উৎসব জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সারাবছর এই দিনের জন্যই গোটা পরিবার অপেক্ষায় থাকি। কবির এই শান্তিভূমে এসে রঙিন হয়ে ফিরে যাই। সারা বছরই যেন রঙিন থাকে সবাই।

বাংলাদেশ থেকে এসেছেন চিন্ময় পোদ্দার। বললেন, তার আসার দুটো কারণ। এক, তার বোন শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেন। দুই, বসন্ত উৎসবের এই সময়ে একটা এমন পরিবেশ তৈরি হয় শান্তিনিকেতনের, সেটি অনুভব করতে। শান্তিনিকেতন কেন বিশ্বকবি নাম দিয়ে গিয়েছিলেন, সেটা সম্ভবত এই সময় না এলে টের পেতাম না। 

বিশ্বভারতীয় কলাভবনের শিক্ষক অনুভব বালা জানান, এবার আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল। গরমের মাত্রা একটু বেশি।

তিনি স্থানীয় পরিবেশের বর্ণনা করে বলছিলেন যে, আজ পরিবেশটা এমন যে মাঝে মাঝে চারিদিকে পলাশের লাল রং মনকে ভীষণ আবেগতাড়িত করছে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago