‘শাহনাজকে নীরবে-নিভৃতে চলে যেতে হবে এটা ভাবতে খুব খারাপ লাগে’
বাংলাদেশের জনপ্রিয় গীতিকারদের একজন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। অসংখ্য কালজয়ী গানের এই স্রষ্টা একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, রচয়িতা, গীতিকার ও সুরকার। ২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক লাভ করা এই গুণীর বহু গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সদ্য প্রয়াত শাহনাজ রহমতউল্লাহ।
শোকাহত এই সুরকার প্রয়াতের বাসায় এসে আজ (২৪ মার্চ) উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, “একেকজন বড় মাপের শিল্পী একেকজন দূতের ভূমিকা পালন করেন। আমরা যদি ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো লতা মুঙ্গেশকরের নাম বললে সারা পৃথিবী চেনে। পাকিস্তানের নূরজাহানের নাম বললে সারা পৃথিবী চেনে। তেমনি বাংলাদেশে কয়েকজন শিল্পী রয়েছেন তাদের নাম বললে সারা পৃথিবী মানুষ চিতে পারতো। যারা বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন সারাদেশ জুড়ে সেখানে দেশীয়ভাবে তারা কতোটা মর্যাদা সম্পন্ন হচ্ছেন, কী হচ্ছেন না সেটি অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।”
“আমি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করি- শিল্পী নিজের তৃপ্তির জন্যে শিল্পের কাজ করেন। আমি যখন চলচ্চিত্রে এলাম বা চলচ্চিত্র শুরু করলাম তখন আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন- তুমি তো জানো না এধরনের অঙ্গনে যারা বিরাজ করে শেষ পর্যন্ত তারা পয়সার অভাবে চিকিৎসাও করতে পারে না। এই সংস্কৃতি পরিবর্তনের জায়গায় আমরা এসে গেছি। আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছি, সার্বিকভাবে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা যে দাবি করতে পারছি এর পেছনে সংগীত অঙ্গনের মানুষগুলো ভূমিকা অত্যন্ত অত্যন্ত স্পষ্ট।”
“আমরা স্বাধীনবাংলা বেতার থেকে যে গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করতাম ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’- তা আমারই লেখা। সেখানে নতুন সূর্যোদয়ের কথা বলা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে একজন জব্বারকে, একজন শাহনাজকে নীরবে-নিভৃতে চলে যেতে হবে এটা তো ভাবতে খুব খারাপ লাগে। আবার বাবার সেই কথাটিই মনে পড়ে যায়।”
“যাই হোক- দেশ আমাদের, মাটি আমাদের, মানুষ আমাদের। আমরা আমাদের কর্মটাকে ছড়িয়ে দিতে চাই সবার মাঝে। এ দেশটাকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে চাই। আরও বেশি করে পরিচিত করতে চাই বিশ্বজনের কাছে।”
আরও পড়ুন:
চলে গেলেন গানের পাখি শাহনাজ রহমতউল্লাহ
বারিধারায় শাহনাজ রহমতউল্লাহর জানাজা বাদ জোহর, বনানীতে দাফন
Comments