'কাগুজে বড় ম্যাচের' আগে পুরনো উত্তাপ ফেরানোর আশা
কাগুজে বাঘের যেমন তর্জন-গর্জন নেই, ভেতরটা ফাঁপা, কেবল আছে বাঘের মতো একটা আদল। ঢাকার ক্রিকেটে আবাহনী আর মোহামেডান ম্যাচও যেন এখন অনেকটাই তাই। কোন এক যুগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, উত্তাপ ছিল। তা আজ আর নেই। পুরাতনের জেরেই এটি পায় বড় ম্যাচের তকমা। কিন্তু পুরো আবহেই তার তাপ নেই। এবারের মৌসুমের প্রথম আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের আগেও সেই ম্যাড়ম্যাড়ে ছবিই দিচ্ছে ঝাঁজ মিইয়ে যাওয়ার প্রমাণ।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে ঢাকার ক্রিকেটে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী আবাহনী লিমিটেড আর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। পয়েন্ট টেবিল বলুন, নামে ভারে বলুন এই আবাহনীর সঙ্গে কোন তুলনাই চলে না মোহামেডানের।
এবার এই পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের চারটিই জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে আবাহনী। আগেরবারের চেয়ে অনেক ভালো দল নিয়ে এবার প্রথম তিন ম্যাচ জিতে ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল মোহামেডান। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচেই হেরে পাঁচ নম্বরে আছে তারা।
এক সময় আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে থাকত ভরপুর গ্যালারি। দুই দলের সমর্থকদের উপস্থিতিতে স্নায়ুচাপে ভুগতেন খেলোয়াড়রা। এখন পাঁড় সমর্থকরাও খেলা দেখতে মাঠে আসেন না। প্রায় ফাঁকা গ্যালারির সামনে নিয়ে মাঠের খেলাও ছড়ায় না রোমাঞ্চ। খেলোয়াড়রাও টের পান না উত্তেজনা। এবার আবাহনীর অধিনায়কত্ব করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত স্বীকারই করলেন এই ম্যাচের আলাদা কোন শিহরণ তার কাছে নেই, 'আসলে সকালে প্র্যাকটিসে আসার পর মনে হয়েছে কাল মনে হয় আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ। আবাহনী-মোহামেডান সবসময়ই শুনে আসছি খুব প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ হয়। সেই উত্তেজনা আসলে মাঠে পাওয়া যায় এখন। আগে অনেক বেশি দর্শক থাকে না। আবাহনীর একটা সাইড থাকত, মোহামেডানের একটা সাইড থাকত। পুরো ভরা থাকত গ্যালারী। এখন হয়তো গুটিকয়েক দর্শক থাকে মাঠে, আমরা প্লেয়াররা তাদের মত খেলি। এটাই চলছে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে।'
সোমবার ম্যাচের আগে অবশ্য হালকা অনুশীলন করেছে দু'দল। আবাহনী অধিনায়ক জানালেন সেরা দলটাই নামাবেন তারা। খেলবেন মাশরাফি মর্তুজা, চোট কাটিয়ে ফিরবেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। নিউজিল্যান্ড সফরের পর বিশ্রাম শেষে মোহামেডানের হয়ে নামতে পারেন লিটন কুমার দাস।
ম্রিয়মান বাস্তবতা সামনে রেখেও মোসাদ্দেক আর মঞ্জুরুল দুজনেই দিলেন দারুণ লড়াইয়ের আশা। কে জানে সোমবার দারুণ রোমাঞ্চকর কোন লড়াইই হয়ত হয়ে যাবে। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে দর্শকদের নিভে যাওয়া আগ্রহেও হয়ত মিলবে নতুন জ্বালানি।
Comments