রাসেলের তাণ্ডবে হতভম্ব সাকিবরা
ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে শক্ত পূঁজি পেয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। বল হাতে সাকিব আল হাসান এনেছিলেন ভালো শুরু। কিন্তু নিতিশ রানার ব্যাটে ম্যাচে থাকা কলকাতা নাইট রাইডার্স শেষ দিকে জিতে গেছে আন্দ্রে রাসেলের তাণ্ডবে।
রোববার কলকাতা ইডেন গার্ডেনে আগে ব্যাট পেয়ে ১৮১ রান করেছিল সানরাইজার্স। সাকিবের করা শেষ ওভারে ওই রান টপকে ৬ উইকেটে জিতেছে কলকাতা। মাত্র ১৯ বলে ৪টি করে ছক্কা আর চার মেরে ৪৯ রান করে অপরাজিত থেকে নায়ক বনেছেন রাসেল। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৮ রান অবশ্য এসেছে নিতিশ রানার ব্যাট থেকে। দলের জয়ের ভিতও তারই গড়া।
অথচ ম্যাচের একটা পর্যায়ে জয় দেখছিল সানরাইজার্সই। কলকাতার জিততে ১৮ বলে দরকার ছিল ৫৩ রান। রাসেল ক্রিজে ছিলেন বলেই ছিল তাদের আশা। সেই রাসেলের ব্যাটই উত্তাল হয়ে পাইয়ে দেয় তাদের জয়।
সিদ্ধার্থ কাউলের ১৮তম ওভার থেকে দুই ছক্কা রাসেল নেন ১৯ রান। তারপরও ১২ বলে দরকার ছিল ৩৪ রান। এর আগে দারুণ বল করা ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ভুবনেশ্বর কুমারকে পিটিয়ে ১৯তম ওভার থেকে রাসেল নিয়ে নেন ২১ রান।
শেষ ওভারে দরকার দাঁড়ায় কেবল ১৩ রান। ওই চ্যালেঞ্জ জিততে সানরাইজার্সের ভরসা তখন সাকিব। প্রথম বলটা ওয়াইড হওয়ার পর এক রান নেন রাসেল। এরপর শুভমান গিল দুই ছক্কায় শেষ করে দেন খেলা।
এর আগে ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কলকাতা ৭ রানে সাকিবের আঘাতে হারিয়েছিল ক্রিস লিনকে। কিন্তু আরেক ওপেনার নিতিশ রানা ছিলেন তেতে। রবিন উথাপাকে নিয়ে তিনি টানেন দলকে। উথাপা আর অধিনায়ক দিনেশ কার্তিক দ্রুত ফিরলেও চালিয়ে যান রানা। আলোক স্বল্পতার বিরতির পর খেলা শুরু হতেই ৪৭ বলে ৬৮ রানের ইনিংস থামান রানা।
এই ম্যাচ দিয়ে প্রায় দেড়মাস পর চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট অধিনায়ক সাকিব। নিজের ৩৩তম জন্মদিনে ইডেন গার্ডেনে ঘণ্টা বাজিয়ে খেলাও শুরু করেন তিনি।
ব্যাট করতে নামার সুযোগ না মিললেও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বল হাতে পান সাকিব। প্রথম বল ডট খেলে দ্বিতীয় বলেই তাকে ছক্কা মেরে দিয়েছিলেন ক্রিস লিন। লিনের ভাও বুঝে নিয়ে তরিকা বদলে তাকে পরের তিন বলে জায়গা দেননি সাকিব। একদম শেষ বলে দেন টোপ। অনেক শর্ট আর্ম বল করেছিলেন। লিন তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। রশিদ খানের লোপ্পা ক্যাচ নিতে কোন সমস্যা হয়নি।
৬ রান দিয়ে ১ উইকেট পাওয়ার পর আবার ৬ষ্ঠ ওভারে বল করতে আসেন সাকিব। ওই ওভারে দেন ৭ রান। একাদশ ওভারে আবার এসে অবশ্য মার খেয়েছেন। উথাপা আর রানা দুই ছক্কায়র তার কাছ থেকে নিয়ে নেন ১৫ রান।
নিজের শেষ ওভারটা ছিল ইনিংসেরও শেষ ওভার। সাকিবের সামনে ছিল হিরো হওয়ার সুযোগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না তিনি।
বিকেলে টস জিতে সানরাইজার্সকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় কলকাতা। দুই ওপেনার ওয়ার্নার আর জনি বেয়ারস্টো পাইয়ে দেন দারুণ শুরু। ওপেনিং জুটি থেকেই আসে ১১৮ রান। বেয়ারস্টো ছিলেন কিছুটা মন্থর। ৩৫ বলে ৩৯ রান করে থামে তার দৌঁড়। অপর পাশে আলোর ঝলকানি ছিল ওয়ার্নারের ব্যাটে। ৫৩ বলে ৯ চার আর তিন ছক্কায় ৮৫ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডাউনে নেমে বিজয় শঙ্কর ২৪ বলে ৪০ রান করে দলকে পাইয়ে দিয়েছিলেন শক্ত সংগ্রহ। কিন্তু রাসেলের বিধ্বংসী দিনে তা হলো না পর্যাপ্ত।
Comments