মার্কিন হস্তক্ষেপ ঠেকাতে ভেনেজুয়েলায় রুশ সেনা

দক্ষিণ আমেরিকার তেল-সমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সঙ্কটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে সে জন্যে সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শে পরিচালিত দেশটিতে সৈন্য পাঠিয়েছে রাশিয়া।
Russian plane in Caracas
২৫ মার্চ ২০১৯ তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের সিমন বলিভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাশিয়ার পতাকাবাহী একটি উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আমেরিকার তেল-সমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সঙ্কটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে সে জন্যে সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শে পরিচালিত দেশটিতে সৈন্য পাঠিয়েছে রাশিয়া।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে- রুশ বিমানবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজে চড়ে ১০০ মতো সেনা এবং একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ভেনেজুয়েলায় পৌঁছেছেন।

একটি ফ্লাইট-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটে দেখা যায়- গত ২২ মার্চ রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানবন্দর থেকে দুটি উড়োজাহাজ ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের উদ্দেশে রওনা দেয়। অপর একটি ফ্লাইট-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট জানায়, গতকাল (২৪ মার্চ) কারাকাস ছেড়েছে একটি উড়োজাহাজ।

বার্তা সংস্থাটির মতে, গত তিন মাস আগে ভেনেজুয়েলার মাটিতে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ার পর এ ঘটনা ঘটলো। সেসময় ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলা মাদুরো বলেছিলেন, যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো রাশিয়ার সঙ্গে হুগো চাভেজের দেশটির সম্পর্ক অনেক শক্ত।

কিন্তু, বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে ভিন্ন চোখে। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে রাশিয়া আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে।

ফ্লাইট-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানায়, গত ২২ মার্চ ইলিউশিন আইএল-৬২ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ এবং আন্তোনভ এএন-১২৪ সামরিক কার্গো বিমান রাশিয়ার সামরিক বিমানবন্দর চকালভস্কি থেকে কারাকাসের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে তারা সিরিয়াতে যাত্রাবিরতি দিয়েছিলো।

অপর ফ্লাইট-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট এডিএসবিএক্সচেঞ্জ জানায়, কার্গো বিমানটি কারাকাস ছাড়ে ২৪ মার্চ বিকালে।

Sao Paulo performance
ব্রাজিলের প্রধান বাণিজ্যিক শহর সাও পাওলোতে এক পারফরমেন্সে ভেনেজুয়েলার শিল্পী দেবোরাহ ক্যাস্টিলো সামরিক বাহিনীর পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির জুতা চাটছেন। পারফরমেন্সটিতে তিনি প্রতীকীভাবে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতাসীন ও দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমালোচনা করেন। ছবি: রয়টার্স

এদিকে, গত ২৩ মার্চ এক টুইটার বার্তায় সাংবাদিক জেভিয়ার মায়োরকা লিখেছিলেন- (রাশিয়া থেকে) প্রথম উড়োজাহাজটিতে এসেছেন স্থলবাহিনীর প্রধান ভাসিলি তোনকোশকুরোভ এবং দ্বিতীয়টি ছিলো কার্গো বিমান। এতে ৩৫ টন সামগ্রী ছিলো।

রুশ দূতাবাসের এক সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা স্পুটনিক জানায়, কর্মকর্তারা ‘মতবিনিময়’ করতে ভেনেজুয়েলায় এসেছেন।

তবে এ বিষয়ে তাক্ষণিকভাবে ভেনেজুয়েলার তথ্যমন্ত্রণালয় থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সরকারের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ এনে বিরোধীদলের নেতা হুয়ান গুয়াইদো লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেয়। এর ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রকট হয় অর্থনৈতিক সঙ্কট।

এমন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় গুয়াইদো। তার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। অন্যদিকে, বর্তমান রাষ্ট্রপতি মাদুরো ডাক দেন বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে। তার ডাকে সাড়া দেয় রাশিয়া ও চীনসহ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন দেশ। তারপর ধীরে ধীরে দক্ষিণ আমেরিকার খনিজসমৃদ্ধ দেশটি হয়ে উঠে বিশ্বশক্তির ‘যুদ্ধক্ষেত্র’।

এমন প্রেক্ষাপটে এক ধাপ এগিয়ে ভেনেজুয়েলায় সেনা পাঠালো রাশিয়া।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago