বনানীর আগুন থেকে বেঁচে ফেরা একজনের ভাষ্য

সেঁজুতি দৌলা ডর্ড গ্রুপ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। গতকাল (২৯ মার্চ) বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার সময় তিনি ভবনটির ১৩ তলায় অবস্থান করছিলেন। ভয়ঙ্কর সে আগুন থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও মৃত্যুর বিভীষিকা এখনও তাড়া করছে তাকে।

সেঁজুতি দৌলা ডর্ড গ্রুপ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। গতকাল (২৯ মার্চ) বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার সময় তিনি ভবনটির ১৩ তলায় অবস্থান করছিলেন। ভয়ঙ্কর সে আগুন থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও মৃত্যুর বিভীষিকা এখনও তাড়া করছে তাকে।

তিনি জানান, আগুন থেকে বাঁচতে অন্য অনেকের মতো মরিয়া প্রচেষ্টার ফলে অবশেষে পাশের একটি ভবনের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসতে সক্ষম হন তিনি। সাংবাদিকদের সামনে ভয়াবহ সে অভিজ্ঞতারই বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

তার ভাষ্যে, সিঁড়ি ছিলো, ওটা দিয়ে নামা শুরু করলাম। অনেক ধোঁয়া ছিলো। কিছুদূর নিচে নামার পরেই...কারণ ওই অবস্থায় কিছু হিসেবও করা যাচ্ছিলো না, কতদূর নেমেছি। দেখি যে এতো ধোঁয়া, আমরা আর এগুতে পারছি না। তখন আমরা ছাদের দিকে যাওয়া শুরু করলাম। ছাদের দিকে আমরা যাচ্ছি, ওখানেও অনেক ধোঁয়া ছিলো, মানে আমরা পারছিলামই না। মুখ ঢেকে কোনোরকমে ছাদ পর্যন্ত গেলাম। যেয়ে আমরা এই বিল্ডিং থেকে পাশের বিল্ডিংয়ে...বোধহয় নির্মাণকাজ চলছিলো ওই ফ্লোরে...যার জন্যে জানালাটা ছিলো না। আমরা লাফ দিয়ে পাশের বিল্ডিংয়ে ঢুকলাম। তারপরে আমরা নেমে আসলাম। জিনিসটা খুবই তাড়াতাড়ি হয়েছে এবং এখানে আমাদের অনেকগুলো অফিসের ফ্লোর, মানে নিচে না আসা পর্যন্ত বুঝতেও পারছিলাম না যে কয়জন নামতে পেরেছে আর কয়জন পারেনি।

পাশের বিল্ডিং থেকে নামার বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওখান থেকেও সিঁড়ি দিয়ে নেমেছি। আমাদের ফ্লোরে যারা ছিলো সবাই উপরে চলে যেতে পেরেছিলাম। প্রথমে নিচে নেমে পারিনি, তারপর আমরা সবাই উপরে যেয়ে ওইভাবেই নেমেছি। সেটাতো ছিলো আমাদের ফ্লোরের ঘটনা। কিন্তু বাইরে তো দাঁড়িয়ে দেখলাম যে অন্য মানুষের তো...জীবন বাঁচানোর জন্য প্যানিক।

চোখের সামনে কাউকে অজ্ঞান হয়ে যেতে বা সিঁড়িতে পড়ে যেয়ে আহত হতে দেখেননি বলে জানান তিনি। বলেন, না না...ওই পরিস্থিতি তখনও ছিলো না। আমি বের হওয়ার পরপর মনে হয় পরিস্থিতি আরও অনেক খারাপ হয়ে গেল। মানে আগুনটা ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। যার জন্য আমাদের নিচের তলায় ৩০ জনের মতো আটকা পড়ে গেল এবং তার নিচের তলায়ও লোকজন আটকা পড়ে গিয়েছিলো। 

আগুন লাগার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো ঠিক জানি না। তবে শুনেছি যে সাততলায় একটি সর্ট সার্কিটের জন্য হয়েছে। নিচে এসে তো দেখলাম যে ওই সাততলা থেকে আগুন, ধোঁয়া বের হচ্ছে। তার কিছুক্ষণ পর তো আগুন ধাউধাউ করে ১০ তলা পর্যন্ত উঠে গেল। 

যে সিঁড়ি দিয়ে তিনি নেমেছেন সেটি নামার জন্য পর্যাপ্ত ছিলো কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জরুরি বহিগর্মন সিঁড়ি তো, একটু চিপা সিঁড়ি ছিলো। তারপরে ওখানেও তো অনেক ধোঁয়া ছিলো। সত্যি কথা বলতে এতোকিছু তখন খেয়াল করিনি। কোনোরকমে কোনদিক দিয়ে বের হবো...নিশ্বাসও নিতে পারছি এরকম অবস্থা তখন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago