‘মা আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন, তাই সেলফি তুলে পোস্ট করেছিলাম’

গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানী এলাকায় এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে একটি সেলফি তুলে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ডার্ড গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (এফ অ্যান্ড এ) হাসনাইন আহমেদ রিপন। স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন “আগুন, আগুন; এটা শেষ পোস্ট হতে পারে।”
আগুন লাগার পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আসছিল চারপাশ। এর মধ্যেই মায়ের ইচ্ছায় ফেসবুকে এই ছবি পোস্ট করেছিলেন হাসনাইন আহমেদ রিপন। ছবি: ফেসবুক একাউন্ট তেকে নেওয়া

গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানী এলাকায় এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে একটি সেলফি তুলে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ডার্ড গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (এফ অ্যান্ড এ) হাসনাইন আহমেদ রিপন। স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন “আগুন, আগুন; এটা শেষ পোস্ট হতে পারে।”

নিজের চারপাশে ধোঁয়া ঘিরে আসার পর তিনটি সেলফি তিনি পোস্ট করেন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে। সঙ্গে লিখেছিলেন, “মা, মিনা মিলন আপু ফাহিম ভাই, সবাই আমারে মাফ করে দিস, আগুন- এফআর টাওয়ার লিফট ১৩।”

সেই ঘটনার তিনদিন পর আজ (১ এপ্রিল) রিপনের সঙ্গে এফআর টাওয়ারের সামনে দেখা হয় এই ফটো সাংবাদিকের। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “সেদিন আমি ডার্ড গ্রুপের অফিসে ১৪ তলায় ছিলাম। আগুনে আটকা পড়েছিলাম। বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় ওখান থেকে আমাকে ক্রেনের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।”

“আমার মার শেষ ইচ্ছা ছিলো আমাকে দেখার। আমি মার উদ্দেশে ছবিটি পোস্ট করেছিলাম। ওসময় ভিডিও কল দেওয়া সম্ভব ছিলো না। ভাইরাল হওয়ার জন্যে আমি ছবিটি পোস্ট করিনি। মা ফোনে বলেছিলেন- আমি তোমাকে একটু দেখতে চাই। সেসময় আমি দুই-তিনটা সেলফি তুলে পোস্ট করেছিলাম।”

“তারপরও, ছবিটি দেখে অনেকে ফোন করেছিলেন, শুভ কামনা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সবার দোয়ায় আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম। আমাদের ফ্লোরে কেউ মারা যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, “সেদিন দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে আমরা জানালার কাছে এসে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছিলাম। এটিই হয়তো আমাদের শেষ দেখা। আমরা ওই সময় নামাজ পড়ার চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু, ধোঁয়ার কারণে সম্ভব হয়নি। আমরা সেসময় কালেমা ও দোয়া পড়ছিলাম।”

Comments