কতটুকু জানি টেলি সামাদকে
কৌতুক অভিনয়ে টেলি সামাদ কিংবদন্তিতুল্য এক ব্যক্তির নাম। টেলিভিশন নাটকে কাজ করতে গিয়েই আব্দুস সামাদ হয়ে যান টেলি সামাদ। জব্বার আলী নাটকের তুমুল জনপ্রিয়তাই তাকে সামাদ থেকে টেলি সামাদ বানায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে পাশ করে চলচ্চিত্রে নাম লেখান ১৯৭৩ সালে। কৌতুক অভিনেতা হিসেবে যখন রবিউল, খান জয়নুল, আশীষ কুমার লৌহ, আনিস, লালু, হাসমতেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তখন আব্দুস সামাদ চলচ্চিত্রে হাজির হন ভিন্নরূপে ভিন্ন আঙ্গিকে।
হালকা পাতলা দেহে বাহারি রঙের পোশাক সঙ্গে মাথায় ঝাঁকরা চুল। অন্য সবার থেকে নিজের স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরলেন অভিনয় শিল্পে। কৌতুক শিল্পীর গানও যে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পায় তা টেলি সামাদ দেখিয়েছেন। এক সময় মানুষের মুখে মুখে ছিল বিখ্যাত সেই গান- “ড্যাগেরও ভিতরে ডাইলে চাইলে খিচুড়ি” অথবা “কাউয়ায় কমলা খাইতে জানে না”। অর্ধশত চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন তিনি।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে, পরিচালক, নৃত্য পরিচালক,গীতিকার, সুরকার হিসেবেও কাজ করেছেন টেলি সামাদ। শেষ জীবনে সার্কাসে সার্কাসে গিয়ে গান করতেন। ২০১০ সালে সর্বশেষ দেখেছিলাম হবিগঞ্জের এক মেলায়। মাইক হাতে নিয়ে বলেছিলেন, একটা সময় ছিল কৌতুক অভিনেতার গুরুত্ব নায়কের চেয়ে কম ছিল না আর এখন...। অনেকেরই হয়তো জানা নেই টেলি সামাদ নায়কের ভূমিকাতেও অভিনয় করেছেন। তিনি বলতেন কষাঘাতে জর্জরিত জীবনের প্রতিচ্ছবি হচ্ছে কৌতুক। জীবনের শেষ সময়টা তার ভাষায় কৌতুকের মতোই কেটেছে। কেউ খোঁজ নেয়নি, কোনো গণমাধ্যমে সেই অর্থে সংবাদও করেনি।
তিনি বলতেন অঙ্গভঙ্গি নয় কথা দিয়ে মানুষের মন জয় করা, মানুষকে হাসানোই কঠিন কাজ।
Comments