সৌদি আরবের পরমাণু প্রকল্প

প্রতিবেশী ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে রাতের ঘুম হারাম করা সৌদি আরব এখন নিজেই নেমেছে পরমাণু শক্তিধর হওয়ার প্রতিযোগিতায়। তেহরানের উষ্মা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা সত্ত্বেও রিয়াদের অদূরে দ্রুত গড়ে উঠছে সৌদি পরমাণু কর্মসূচির অবকাঠামো।
গুগলআর্থের প্রকাশিত ছবিতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কাছে কিং আব্দুলআজিজ সিটিতে দেশটির পরমাণু গবেষণা অবকাঠামো। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেশী ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে রাতের ঘুম হারাম করা সৌদি আরব এখন নিজেই নেমেছে পরমাণু শক্তিধর হওয়ার প্রতিযোগিতায়। তেহরানের উষ্মা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা সত্ত্বেও রিয়াদের অদূরে দ্রুত গড়ে উঠছে সৌদি পরমাণু কর্মসূচির অবকাঠামো।

সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে আজ (৭ এপ্রিল) বলা হয়, নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে পরীক্ষামূলক রিঅ্যাক্টর নির্মাণের কাজ ‘প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে’ এগিয়ে চলছে। এতে আরও বলা হয়, সৌদি সরকারের ঘোষণা দেওয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় এই কর্মযজ্ঞ দৃশ্যমান হয়ে উঠে বিশ্ববাসীর কাছে।

আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাবেক পরিচালক রবার্ট কেলি জানান, আগামী ‘নয় মাস থেকে ১ বছরের’ মধ্যে রিঅ্যাকটর নির্মাণের কাজ শেষ হবে।

গত বছরের জুলাইয়ে আইএইএ একটি দল পাঠায় সৌদি আরবের অবকাঠামো পরীক্ষা করতে। সৌদি সরকার বরাবরই বলে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচিটি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু, গত বছর দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, “ইরান যদি পরমাণু বোমা তৈরি করে তাহলে কোনো সন্দেহ নেই যে যতো দ্রুত সম্ভব আমরাও সেই পথে হাঁটবো।”

এরপর, পরমাণু বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি সৌদির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হতে দেখা যায় কোনো কোনো মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের মধ্যে। সেই উদ্বেগকে আরও উস্কে দেয় সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহর বক্তব্য। তিনি বলেন, “আমাদের রিঅ্যাক্টরগুলোতে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করতে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আমাদের দেশের বাইরে থেকে আনার প্রয়োজন নেই।” এর মাধ্যমে তিনি সৌদির কাছে সঞ্চিত ইউরেনিয়ামের প্রতি ইঙ্গিত করেন।

১০০ বছর লেগে যাবে

মধ্যপ্রাচ্যের খনিজসমৃদ্ধ সৌদি আরবের রয়েছে ‘ভিশন ২০৩০’। সেই সময়ের মধ্যে দেশটিকে কতো উচ্চতায় তুলে আনা যায় তা নিয়ে চলছে বিভিন্ন কর্মতৎপরতা। গত ৯ বছর আগে সৌদি সরকার প্রথম পরমাণু শক্তিধর হওয়ার স্বপ্ন জনসম্মুখে প্রকাশ করে। কিন্তু, যুবরাজ সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’ ঘোষণার পরপরই শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। সেই কর্মপরিকল্পনায় দেশটিতে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে- আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে সৌদির বিদ্যুৎখাতে ১৭ গিগাওয়াট বা মূল চাহিদার ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ পরমাণুশক্তি থেকে সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে সেখানে।

এই পরীক্ষামূলক রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করা হচ্ছে কিং আব্দুল আজিজ সিটি ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। পরিদর্শন শেষে আইএইএ সাবেক পরিচালক রবার্ট কেলি জানান, সৌদি আরবের রিঅ্যাক্টরের নকশা করা হয়েছে বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো করে। তিনি মনে করেন, এখান থেকে পরমাণু বোমা তৈরি করতে যে প্রক্রিয়ার প্রয়োজন তাতে ১০০ বছর লেগে যাবে।

চূড়ান্ত তালিকায় ৫ দেশ

সৌদি আরবের পরমাণু রিঅ্যাক্টরের কাজ পেতে আন্তর্জাতিক মহলে চলছে বেশ তৎপরতা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিংহাউজের পাশাপাশি চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো সেই কাজ পেতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে বলে জানায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago